২৭ বছরে একবারও ব্যবহার হয়নি এক্স-রে মেশিন

মৌলভীবাজারের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় ৩ দশক আগে এক্স-রে মেশিন আনা হয়। অপারেটর না থাকায় তা ব্যবহার করা হয়নি।
ছবি: স্টার

মৌলভীবাজারের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় ৩ দশক আগে এক্স-রে মেশিন আনা হয়। অপারেটর না থাকায় তা ব্যবহার করা হয়নি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, ১৯৯৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিচতলায় জরুরি বিভাগের কাছে এক্স-রে মেশিন বসানো হয়। এটি পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেয়নি। তাই, এটি চালু করা সম্ভব হয়নি।

সম্প্রতি, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এক্স-রে মেশিনের সব খুচরা যন্ত্রাংশ সরিয়ে কক্ষটি পরিষ্কার করান।

সরেজমিনে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে মেশিনের কক্ষটি তালাবদ্ধ দেখতে পাওয়া যায়।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তারা কক্ষটি খুলে দিলে সেখানে এক্স-রে ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতির দেখা যায়।

জরুরি বিভাগ থেকে ফেরার সময় উপজেলার হাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমানের সঙ্গে দেখা হয়। রাস্তায় পড়ে গিয়ে ডান পায়ে আঘাত পেয়েছেন তিনি।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে এক্স-রে করার পরামর্শ দেন।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চিকিৎসক আমাকে বলেছেন এখানে এক্স-রে করার ব্যবস্থা নেই। আমাকে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে বলেছেন। আমার কাছে এক্স-রে করার টাকা নেই।'

কুলাউড়া সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুল হাসান সিপন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ১৩ ইউনিয়ন ও এক পৌর এলাকার নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। দুর্ভাগ্যজনক যে, জনবলের অভাবে এক্স-রে মেশিনটি প্রায় ৩ দশক ধরে অব্যবহৃত। এটা নিয়ে কেউ প্রতিবাদ পর্যন্ত করছেন না। একজন টেকনিশিয়ান তো ম্যানেজ করা যেতেই পারে।'

কুলাউড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আখই ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ মানুষের বাস। এখানকার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য কার্যকরী এক্স-রে মেশিন খুবই জরুরি।'

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস আক্তার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক্স-রে মেশিন বসানোর পর আর চালু হয়নি। এটি সক্রিয় আছে কি না, বলতে পারছি না।'

তিনি জানান, যোগদানের পর কক্ষ পরিষ্কারের উদ্যোগ নেন। কারিগরি পদায়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার জানানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। কারণ, এটি ১৯৯৫ সালে স্থাপনের পর অব্যবহৃত পড়ে আছে।'

'রোগীদের এক্স-রে মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষার প্রয়োজন হলে আমরা মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল বা প্রাইভেট ল্যাবরেটরিতে রেফার করি,' যোগ করেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

Comments