অস্ট্রেলিয়ার ভিসা শর্ত শিথিল, সুযোগ বাড়ছে বাংলাদেশিদেরও

সিডনি অপেরা
সিডনি অপেরা হাউস। ছবি: সংগৃহীত

আগামী অক্টোবর মাস থেকে পৃথিবীর সব দেশের নাগরিকদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ভিসার শর্তগুলো শিথিল করা হচ্ছে। এছাড়া রাজ্যগুলোতে বিদেশি শ্রমিক ঘাটতি দেখা দেওয়ায়, ফেডারেল সরকার রাজ্যগুলোর জন্য প্রায় ৫০ হাজার অতিরিক্ত ভিসা বরাদ্দ করেছে। 

ভয়াবহ শ্রমিক সংকট হলেও, অস্ট্রেলিয়া এর আগে শুধু কয়েকটি নির্দিষ্ট দেশের নাগরিকদের সহজ শর্তে ভিসা দিয়েছিল। অধিকাংশ দেশের ক্ষেত্রে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশের নাগরিকদের ভিসার নিয়মগুলো ছিল খুবই কঠোর।

এছাড়াও গত আড়াই বছর মহামারির কারণে অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকে শ্রমিক ভিসা আবেদনের বিষয়ে কড়া বিধিনিষেধ ছিল। 

বিদেশি শ্রমিক ঘাটতির কারণে দেশটির অর্থনীতিতে ধস নামায়, সরকার বর্তমানে সব দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা শর্তগুলো সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে বাংলাদেশি কর্মীরাও বিশেষ সুবিধা পাবে।

গত বছর শুধু স্বাস্থ্যসেবা এবং চিকিৎসা গবেষণাসহ নির্দিষ্ট কিছু খাতে বিদেশি কর্মীদের ভিসার আওতায় আনা হয়েছিল। 

কর্তৃপক্ষ এখন শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভিসা প্রোগ্রাম তৈরি করছে। অর্থাৎ দেশটির সব শিল্প-প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের জন্যই সরকার ভিসার শর্তগুলো শিথিল করছে। 

এ প্রসঙ্গে মেলবোর্নভিত্তিক সাউদার্ন ক্রস ভিসা এবং মাইগ্রেশন সার্ভিসেসের মাইগ্রেশন এজেন্ট ইভানা চেং বলেন, 'ভিক্টোরিয়া রাজ্য প্রায় প্রতিটি শিল্পকে অন্তর্ভুক্ত করে পেশার তালিকা দিয়েছে।'

সাধারণত অভিবাসীদের অস্ট্রেলিয়ায় থাকার জন্য নিয়োগকর্তারা স্পন্সর করেন। এখন রাজ্য এবং অঞ্চল কর্তৃপক্ষও রাজ্য মনোনীত মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের অধীনে ভিসার জন্য দক্ষ কর্মীদের মনোনীত করতে পারবে। 

রাজ্যগুলো মানদণ্ড শিথিল করছে, যেন বিদেশি শ্রমিকদের আবেদন করা সহজ হয়।

রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা স্পন্সর করা শ্রমিকদের আর নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে না। তবে তাদের বয়স ৪৫ বছরের কম হতে হবে।

ক্যানবেরায় আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে 'চাকরি ও দক্ষতা শীর্ষ সম্মেলন'। ফেডারেল সরকার দেশে দক্ষ অভিবাসীর ঘাটতি মোকাবিলা করতে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। 

বিদেশি শ্রমিকদের আবেদনের ফি মওকুফ করা হয়েছে। কর্মসংস্থান চুক্তির মেয়াদ অর্ধেক করা হয়েছে এবং আবেদনকারীদের পর্যাপ্ত তহবিল দেখানোর যে নিয়ম ছিল, সেটা তুলে নেওয়া হয়েছে।

পেশাদার এবং ব্যবস্থাপক পদের জন্য অতিরিক্ত ইংরেজি জানা থাকার প্রয়োজনীয়তাগুলোও থাকছে না এবং কাজের অভিজ্ঞতার প্রয়োজনীয়তা কমানো হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার সবগুলো রাজ্যে শ্রমিক ঘাটতি দেখা দিলে স্বরাষ্ট্র বিভাগ এ বছর রাজ্যগুলোর জন্য অতিরিক্ত প্রায় ৫০ হাজার বিদেশি শ্রমিক ভিসা বরাদ্দ করেছে।  নিউ সাউথ ওয়েলস সর্বোচ্চ ১২ হাজার ভিসা বরাদ্দ পেয়েছে।

১১ হাজার ৫৭০টি ভিসা দেওয়া হচ্ছে ভিক্টোরিয়াকে। বিদেশে বসবাসকারী আবেদনকারীদের পাশাপাশি ভিক্টোরিয়ায় বসবাসকারীদের ভিসার জন্য আবেদন করার অনুমতিও দেওয়া হবে।

নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়ার পর ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া তৃতীয় সর্বোচ্চ হিসেবে ৫ হাজার ৩৫০টি ভিসা বরাদ্দ পেয়েছে।

কুইন্সল্যান্ডে যোগ্য পেশার তালিকায় ২০২২-২৩ সালে ১১৪টি পেশা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রসারিত করা হয়েছে।

কুইন্সল্যান্ডে এ বছর ৩ হাজার কাজের ভিসা, সেই সঙ্গে ১ হাজার ২০০টি আঞ্চলিক ভিসা এবং ২৩৫টি ব্যবসায়িক ভিসা থাকবে।

তাসমানিয়ার প্রোগ্রাম অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে। সেখানে অতিরিক্ত ভিসা বরাদ্দ করা হয়েছে ২৫০টি। যারা কমপক্ষে ২ বছর ধরে রাজ্যে কাজ করেছেন তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরিতে পেশার মানদণ্ড খুবই বিস্তৃত। এখানে ৮০০টি কর্মী ভিসা, ১ হাজার ৯২০টি আঞ্চলিক ভিসা এবং ১০টি ব্যবসায়িক ভিসা আছে।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Govt to procure potato directly from farmers this year

The agricultural adviser visits BADC’s cold storage, central seed testing laboratory, and vegetable seed processing centre

1h ago