বাংলাদেশের প্রতি আমার অনেক মায়া জন্মেছে: আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের নতুন আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রতি আমার অনেক মায়া জন্মেছে। এদেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতির সঙ্গে আমি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। আন্তরিকতায় মুগ্ধ আমি।‘
বাংলাদেশে সংযুক্ত আরব আমিরাতের নতুন রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদির সঙ্গে আমিরাত প্রবাসী সাংবাদিকরা। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের নতুন আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদি বলেছেন, 'বাংলাদেশের প্রতি আমার অনেক মায়া জন্মেছে। এদেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতির সঙ্গে আমি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। আন্তরিকতায় মুগ্ধ আমি।'

সম্প্রতি আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদিকে ঢাকা দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত থেকে পূর্ণ রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার। নতুন দায়িত্ব নিয়ে আমিরাত থেকে বাংলাদেশ যাত্রার প্রাক্কালে ফুজিরাহ শহরে প্রবাসী গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব অনুভূতির কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে যেগুলো আমাকে আপ্লুত করে। বিশেষ করে, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে।'

রাষ্ট্রদূত হিসেবে ইতোমধ্যে আমিরাত সরকারের প্রেসিডেন্ট শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের কাছে শপথ বাক্য পাঠ করেছেন। অচিরেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করবেন।

হামুদি ২০০০ সালের মার্চ থেকে ঢাকায় চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই সময়ে আমিরাত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ব্যাপক অগ্রগতির অবদান রয়েছে তার।

ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় অত্যন্ত বন্ধু সুলভ, সহজ সরল মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ সর্ম্পকে নিজের ধ্যান ধারণা ও নতুন দায়িত্বের করণীয় তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আল হামুদী।

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের বিশাল জনশক্তি আরব আমিরাতে রয়েছে। আমাদের দেশের উন্নয়নে তাদের ব্যাপক অবদান রয়েছে। অন্যদিকে আরব আমিরাত বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে এবং বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগের সম্ভাবনাও রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে এগিয়ে যাওয়া আমার প্রথম কাজ হবে।'

আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদি বলেন, 'দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমরা আশা করব, আমিরাতের সঙ্গে দেশটির সুসম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। যেকোনো সময় আমিরাত বাংলাদেশের পাশে ছিল, থাকবে।'

'যেকোনো দেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। আমরা চাই বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক', রাষ্ট্রদূত যোগ করেন।

বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমরা আশা করব, বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসবে। ভিজিট ভিসায় এসে অনেকে কাজ পাচ্ছে না বলেও আমি জেনেছি। আমরা চাই না এখানে এসে মানুষ দুরাবস্থায় পড়ুক।'

বাংলাদেশ ও আমিরাতের দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বের প্রসঙ্গ টেনে এনে হামুদী বলেন, 'ইতোমধ্যে অনেকের সঙ্গে পরিচিতি ঘটেছে, অনেকের সঙ্গে হয়েছে বন্ধুত্ব। রাষ্ট্রদূত হিসেবে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। আশা করছি, আগামী দিনগুলো আমার সুন্দর কাটবে। এই বন্ধুত্ব চিরঅটুট থাকুক আমরা সেটাই প্রত্যাশা করি।'

আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব ইউএইর সভাপতি শিবলী আল সাদিক, যুগ্ম সম্পাদক এস এম মোদাসসের শাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল শাহীন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি সংগঠক এ কে আজাদ।

আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদি ২০১৩-১৪ সাল পর্যন্ত ত্রিপলি, লিবিয়ায় আমিরাত দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ছিলেন। ২০১৫-১৭ সাল পর্যন্ত ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে আমিরাত, দূতাবাস প্রতিষ্ঠার সদস্য ছিলেন।

১৯৮৫ সালে আমিরাতের ফুজাইরাহতে জন্মগ্রহণ করা আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদি এমিরেটসের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (ব্যবসা ও অ্যাকাউন্টিং) এবং যুক্তরাজ্যের কভেন্ট্রি ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন।

লেখক : আমিরাতপ্রবাসী সাংবাদিক

 

Comments