এমভি আব্দুল্লাহ: মুক্তি পেয়ে আমিরাতের বন্দরে নামতে চান ১৮ নাবিক

এমভি আব্দুল্লাহ। ফাইল ছবি সংগৃহীত

সোমালি জলদস্যুদের কাছে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর মালিকপক্ষ জাহাজের ২৩ নাবিককে দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাব্য উপায় নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করেছে।

জলদস্যুদের সঙ্গে দর কষাকষি শেষ করে ঈদের পরপরই নাবিকসহ জাহাজ ফিরিয়ে আনার আশা করছে জাহাজের মালিকানা প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম।

দস্যুর কবল থেকে মুক্তি পেয়ে নাবিকরা কীভাবে দেশে ফিরতে চান সে বিষয়ে ভাবছেন বলে তাদের কয়েকজনের স্বজন দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন।

তবে এ বিষয়ে কেএসআরএমের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

অভিজ্ঞ নাবিকদের মতে, দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে আসে তখন মুক্তিপণ পাঠানোর উপায় কিংবা ক্রুদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া নিয়ে যথাযথ পরিকল্পনা করতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নাবিকদের বন্ধু ও স্বজন ডেইলি স্টারকে বলেছেন, জাহাজের ক্যাপ্টেন মালিকপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ক্রুদের কাছে জানতে চেয়েছেন যে তারা কোথায় সাইন-অফ (জাহাজের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি) করতে চান। পরবর্তী বন্দর সংযুক্ত আরব আমিরাতে কিংবা জাহাজ চট্টগ্রামে পৌঁছালে, এই দুই বন্দরের উল্লেখ করেছেন তিনি।

গত ১২ মার্চ কয়লাবাহী এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি ২৩ নাবিকসহ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়া উপকূলে দস্যুদের কবলে পড়ে। মুক্তির পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বন্দরে কয়লা খালাস করার কথা এবং তারপর সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে যাওয়ার কথা আছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

জাহাজের এক নাবিকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি ওই নাবিকের স্বজনদের কাছ থেকে বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান।

তিনি বলেন, 'জাহাজটি কাছাকাছি আরব আমিরাতের কোনো বন্দরে পৌঁছানোর পরে অন্তত ১৮ নাবিক জাহাজ থেকে সাইন অফ করতে চান। অপর পাঁচজন চট্টগ্রামে আসার পরে সাইন অফ করতে চান।'

জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের কর্মকর্তারা অবশ্য এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

জানতে চাইলে কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ধরনের তথ্য আমি জানি না।'

তিনি বলেন, 'জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনায় বেশ অগ্রগতি হয়েছে এবং আশা করছি ঈদুল ফিতরের পরপরই নাবিকসহ জাহাজটি মুক্তি দেওয়া হবে।'

প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা এর আগে ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা করছে।

'যদি তারা পরের বন্দরে সাইন অফ করতে চান, তাহলে সেখান থেকে উড়োজাহাজে করে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে,' বলেন তিনি।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আজ বলেছেন, 'সম্পূর্ণ ঘটনা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আশা করছি আমরা নাবিকদের সুষ্ঠুভাবে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব। আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল, ঈদের আগে নাবিকদের যেন দেশে আনতে পারি। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি। আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব।'

এক নাবিকের স্বজন ডেইলি স্টারকে বলেছেন, 'জাহাজটি ছিনতাইয়ের পর থেকে নিয়মিত গোসল না করায় নাবিকদের অনেকেরই স্কিন-ডিজিজ হচ্ছে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা দরকার।'

মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের আল হামরাহ যাচ্ছিল জাহাজটি। সোমালিয়া উপকূল থেকে প্রায় ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকা অবস্থায় জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ে।

 

Comments

The Daily Star  | English
EU lists Bangladesh as safe country for asylum rules

EU lists Bangladesh among 7 'safe' countries, tightening asylum rules

The move, criticised by rights groups, is set to allow EU governments to process asylum applications filed from citizens of those countries more quickly

11h ago