অস্ট্রেলিয়ায় চীনের ২ ‘গোপন পুলিশ স্টেশন’

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান সেফগার্ড ডিফেন্ডারস তাদের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করেছে, অস্ট্রেলিয়ায় অন্তত ২টি গোপন ‘পুলিশ সার্ভিস স্টেশন’ স্থাপন করেছে চীন।
অস্ট্রেলিয়ায় চীনের ২ ‘গোপন পুলিশ স্টেশন’
সেফগার্ড ডিফেন্ডারস জানিয়েছে সিডনিতে চাইনিজ ‘পুলিশ সার্ভিস স্টেশন’ স্থাপন করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান সেফগার্ড ডিফেন্ডারস তাদের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করেছে, অস্ট্রেলিয়ায় অন্তত ২টি গোপন 'পুলিশ সার্ভিস স্টেশন' স্থাপন করেছে চীন।
 
সেফগার্ড ডিফেন্ডারস একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিষ্ঠান। যেটি আইনের শাসনের প্রচার এবং মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে। 

চলতি বছরের শুরুতে তারা প্রতিবেদন করেছে, কেবল অস্ট্রেলিয়াতেই নয় বিশ্বজুড়ে গোপনীয় পুলিশ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে চীন। 

তাদের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টেশনগুলো প্রাথমিকভাবে বিদেশে বসবাসকারী চীনা লোকদের সহায়তার জন্য স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, 'এগুলো আরও অনেক অবৈধ উদ্দেশ্য সম্পন্ন করে।' 

এ ছাড়া বলা হয়েছে, প্রমাণ রয়েছে, তারা চীনা সরকারের নীতি দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। 

৫ ডিসেম্বর সেফগার্ড ডিফেন্ডারস একটি ফলোআপ রিপোর্টে অস্ট্রেলিয়াকে চীনের গোপন পুলিশ স্টেশন স্থাপন করা দেশগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ওয়েনঝো পুলিশের অধীনে সিডনিতে একটি পুলিশ সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করেছে। অন্যটি চীনের নান্টং পুলিশের অধীনে স্থাপন করা হয়েছে। তবে সেটি অস্ট্রেলিয়ার কোথায় স্থাপন করেছে সেই অবস্থানটি নিশ্চিত করা হয়নি।

সেফগার্ড ডিফেন্ডারের সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে ৩০টি দেশ চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে চীনা পুলিশ সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।

এই দেশগুলোর মধ্যে কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং নেদারল্যান্ডস অন্তর্ভুক্ত।

কানাডার পাবলিক ব্রডকাস্টার সিবিসি জানিয়েছে, অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিতে কানাডায় চীনের রাষ্ট্রদূতকে একাধিকবার তলব করা হয়েছে। 

ডিসেম্বরের ফলোআপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন ইউরোপ, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোসহ ৫৩টি দেশে ১০২টি পুলিশ সার্ভিস স্টেশন চিহ্নিত করেছে।

চীনা কর্তৃপক্ষ বলেছে, চীনের বাইরে এমন কেন্দ্র রয়েছে যা স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা পরিচালিত হয়। এদের সঙ্গে চীনা পুলিশ অফিসারদের কোনো সম্পর্ক নেই। এই স্বেচ্ছাসেবকদের লক্ষ্য চীনা নাগরিকদের সহায়তা করা।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধান গণমাধ্যম এসবিএস নিউজ গতকাল রোববার অস্ট্রেলিয়ায় চীনের রাষ্ট্রদূতের অফিসে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করেছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া পায়নি।

এসবিএস নিউজ অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশকেও প্রশ্ন করেছে। তারা বলেছেন, এই বিষয়গুলো সম্পর্কিত মিডিয়া রিপোর্ট সম্পর্কে আমরা সচেতন আছি।'

সেফগার্ড ডিফেন্ডারদের মতে, এই ধরনের স্টেশনগুলো এমন এলাকায় স্থাপন করা হয় যেখানে উল্লেখযোগ্য বিদেশি চীনা সম্প্রদায় রয়েছে।

 

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

 

Comments