প্রবাসে

বাংলাদেশের পতাকার রঙে সাজলো গ্রিসের ঐতিহাসিক ওমোনিয়া স্কয়ার

মহান বিজয় দিবস উদযাপনে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের ঐতিহাসিক ওমোনিয়া স্কয়ারের ফোয়ারায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রঙে আলোকসজ্জা করা হয়।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের ঐতিহাসিক ওমোনিয়া স্কয়ারের ফোয়ারায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রঙে আলোকসজ্জা। ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উদযাপনে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের ঐতিহাসিক ওমোনিয়া স্কয়ারের ফোয়ারায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রঙে আলোকসজ্জা করা হয়।

এথেন্স পৌর কর্তৃপক্ষের সহায়তায় এ উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ দূতাবাস।

১৬ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার পর দর্শনীয় এই পানির ফোয়ারাটি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে। পরের দিন ভোর পর্যন্ত এ আলোকসজ্জা প্রদর্শন করা হয়। পাখির চোঁখে দেখলে মনে হয়, এ যেন এক খণ্ড বাংলাদেশ।

ওমোনিয়া স্কয়ার হলো এথেন্স শহরের প্রাচীনতম চত্বর এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিপণী কেন্দ্র। এটি শহরের কেন্দ্রস্থলে ৬টি প্রধান রাস্তার সংযোগস্থলে অবস্থিত। গ্রিসে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সিংহভাগই বসবাস করেন ওমোনিয়া শহরে।

শহরের প্রাণ কেদ্রের ফোয়ারার বুকে ফুটে ওঠা লাল সবুজের বাংলাদেশকে দেখতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি ছাড়াও জড়ো হয়েছিলেন অনেক গ্রিক নাগরিক ও বিদেশি পর্যটক। তারা বিজয় দিবস উদযাপনের এমন সুন্দর আয়োজনের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছা জানান।

গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদ, দূতাবাসের মিনিষ্টার মোহাম্মদ খালেদ, প্রথম সচিব বিশ্বজিত কুমার পালসহ দূতাবাসের সব সদস্য, বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসসহ প্রবাসী বাংলাদেশি সংগঠনগুলোর নেতা, নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশিরা আলোকসজ্জা উপভোগ করেন।

প্রবাসের বুকে এমন আয়োজন উপভোগ করে উচ্ছ্বাসিত বাংলাদেশিরা। লাল সবুজের পতাকার আদলে আলোকসজ্জা দেখে আনন্দিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দূর পরবাসে এমন আয়োজনে নতুন প্রজন্মও।

এই আলোকসজ্জার মাধ্যমে বাংলাদেশের গৌরবগাঁথাকে তুলে ধরারপাশাপাশি দুদেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করবে বলে প্রত্যাশা রাখেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।

এর আগে সকালে এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ।

দিবসের আলোচনা শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সব শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেহ মুজিবুর রহমান ও ১৫ই আগস্টের শহিদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনানো হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতারা, মহান বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনন্য নেতৃত্ব এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে তাঁদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।

তিনি প্রবাসীদের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানান।

দিবসের কর্মসূচিতে গ্রিসে বসবাসকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী এবং আঞ্চলিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোররা এবং দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা- কর্মচারিসহ সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।

মতিউর রহমান মুন্না: গ্রিসপ্রবাসী সাংবাদিক

Comments