প্রবাসে

গ্রিসে বাংলাদেশিদের বৈধতা প্রক্রিয়ায় দালাল-প্রতারকমুক্ত থাকার আহ্বান

গ্রিসে অনিয়মিত বাংলাদেশিদের বৈধ নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়ায় দালাল ও প্রতারক থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদ।
প্রবাসী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদ রাষ্ট্রদূত। ছবি: সংগৃহীত

গ্রিসে অনিয়মিত বাংলাদেশিদের বৈধ নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়ায় দালাল ও প্রতারক থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদ।

নিজের কোনো ধরনের তথ্য ও দলিলপত্র কাউকে দেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'কোনো বাংলাদেশি নাগরিক অতি উৎসাহী হয়ে যেন কোনো দালাল বা প্রতারক দ্বারা প্রতারিত না হোন এবং বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা ও প্রতারক চক্রের প্ররোচনার শিকার যাতে না হতে হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।'

বৈধতা প্রক্রিয়া নিয়ে প্রবাসী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

অনলাইনে আবেদনের বিষয়ে আসুদ আহমদ বলেন, 'অনিয়মিত বাংলাদেশিদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। যে কোনো ধরনের সাহায্যের দরকার হলে অন্য কোথাও না গিয়ে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।'

বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় গ্রিস সরকার ১২ জানুয়ারি থেকে অনিয়মিত অভিবাসী বাংলাদেশিদের বৈধতা প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছে। দেশটির অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের চালু করা অনলাইন প্লাটফরমের মাধমে আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশিরা।

আবেদন গ্রহণ করা হলে অস্থায়ী রেসিডেন্ট কার্ড (বেবুয়সি) ইমেইলে পেয়ে যাবেন। আবেদনকারীরা যেসব কাগজপত্র জমা দিবেন সেগুলো সরকার যাচাই বাছাই করে সঠিকতা নিরূপণ করার পরই অভিবাসীদের রেসিডেন্ট কার্ড দেওয়া হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, 'গ্রিসে অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মিতভাবে অবস্থান করায় বাংলাদেশে যেতে পারছেন না, তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না, তারা কিন্তু অস্থায়ী রেসিডেন্ট কার্ড পেয়েই বাংলাদেশে যেতে পারবেন। ঘুরে আসতে পারবেন। গ্রিসেও সব ধরনের কাজ করতে পারবেন।'

বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এই প্লাটফরমে আবেদনের জন্য ২ বছরের বেশি মেয়াদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট, ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বা এর আগে থেকে গ্রিসে অবস্থানের প্রমানপত্র, গ্রিসের একজন চাকরিদাতার নিয়োগের ইচ্ছাপত্র, আবেদন ফি (পারাবোলো) ৭৫ ইউরো নির্ধারিত ২১৪৮ কোডে জমা করে কোড সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়া নিজ নামে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর, ব্যক্তিগত সক্রিয় ই-মেইল আইডি থাকতে হবে।

এসব ডকুমেন্টস থাকলেই একজন অনিয়মিত বাংলাদেশি বৈধ হতে পারবেন।

বৈধতা দেওয়ার এই প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে গ্রিসে বসবাসরত উপযুক্ত ও আগ্রহী বাংলাদেশি নাগরিকরা দূতাবাস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নিজ নিজ পাসপোর্ট সত্যায়িত করার মাধ্যমে প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।

দ্বিতীয় ধাপে দূতাবাসে নিবন্ধনকৃতদের গ্রিক সরকারের চালু করা অনলাইন প্ল্যাটফরমে প্রাথমিক তথ্য দিয়ে বৈধতার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদন সাবমিট করার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজ ই-মেইল আইডিতে বৈধতা লাভের জন্য আবেদনের সনদ পাঠানো হবে যা স্মার্ট কার্ড রেসিডেন্স পারমিট ইস্যু না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প রেসিডেন্স পারমিট হিসেবে কার্যকর থাকবে।

এ বিকল্প রেসিডেন্স পারমিট দিয়ে আবেদনকারী যেকোনো ধরনের চাকরিসহ সবধরনের নাগরিক সুযোগসুবিধা ভোগ করতে পারবেন এবং বাংলাদেশে নিয়মিত যাতায়াত করতে পারবেন।

আগামী ৬ মাস এই বৈধকরণ প্রক্রিয়া চলবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

লেখক: গ্রিসপ্রবাসী সাংবাদিক

 

Comments