জেনেভায় ‘ওয়ার অ্যান্ড ওম্যান’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

বক্তারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা ও গণধর্ষণের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা, ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানান।
জেনেভায় জাতিসংঘ ভবনে ‘ওয়ার অ্যান্ড ওম্যান’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন। ছবি: সংগৃহীত

একাত্তরের ২৫শে মার্চের মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশে শুরু হয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা। পাক বাহিনীর এই গণহত্যার নজির মানবজাতির ইতিহাসের আর কোথাও নেই।

মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশে কখনোই ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করতে পারত না, যদি তাদের সঙ্গে এদেশের জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামের মতো দল প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা ও হত্যাযজ্ঞে অংশ গ্রহণ না করত। সেই সময়ের ভয়াবহ গণহত্যা, নিরপরাধ শিশু ও নারী হত্যা এবং হত্যাপূর্বে গণধর্ষণের মতো ঘটনা প্রবাহের প্রত্যক্ষদর্শী গবেষক, লেখক ও রণাঙ্গনের সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা ড. এম আনিসুল হাসান তার ৪৪৫ পৃষ্ঠার 'ওয়ার অ্যান্ড ওম্যান' গ্রন্থে তুলে এনেছেন।

গত ২৪ মার্চ সকালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ ভবনের ক্যাফেটেরিয়া কর্নার সার্পেন্ট বারে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

মোড়ক উন্মোচন করেন স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশ নেওয়া ৪ বীর মুক্তিযোদ্ধা, সর্ব ইউরোপীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি আমিনুর রহমান খসরু, সহ-সভাপতি মহসিন হায়দার, সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া আবুল কালাম।

'সর্ব ইউরোপীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ' ও জেনেভা ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন 'ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর সেক্যুলার বাংলাদেশ'র যৌথ আয়োজনে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার কূটনৈতিক ও এনজিও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান খসরুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন জেনেভাস্থ মানবাধিকার কর্মী ও আয়োজক সংগঠন 'ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর সেক্যুলার বাংলাদেশে'র সভাপতি খলিলুর রহমান মামুন।

প্যানেল স্পিকার ছিলেন সর্বইউরোপীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহ-সভাপতি আবু নাছের মহসিন, ইউনাইটেড কাশ্মীর পিপলস ন্যাশনাল পার্টির চেয়ারম্যান শওকত আলী কাশ্মীরি, সংগঠনের সেন্ট্রাল সেক্রেটারি জামিল মাকসুদ, বেলুচ ভয়েস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মানবাধিকারকর্মী মুনীর মেংগল ও আফ্রিকান কালচারাল ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট ডিয়ানকো লামিনো।

বক্তারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা ও গণধর্ষণের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা, ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানান।

তারা ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবসের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতির দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জোরালো কণ্ঠে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

লেখক: জার্মানপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক

Comments