অস্ট্রেলিয়ার ভিসায় আসছে পরিবর্তন, বাড়ছে অভিবাসীদের সুযোগ-সুবিধা

অস্ট্রেলিয়ার ভিসায় আসছে পরিবর্তন, বাড়ছে অভিবাসীদের সুযোগ-সুবিধা
ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন ব্যবস্থা আরও ফলপ্রসূ করতে আগামী ১ জুলাই থেকে দেশটির ভিসায় আসছে ব্যাপক পরিবর্তন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও'নিল এ বিষয়ে ১৮৬ পৃষ্ঠার একটি পর্যালোচনা ঘোষণা করেছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, 'বর্তমান অভিবাসন ব্যবস্থায় সমস্যা রয়েছে। এতে অস্থায়ী কর্মীদের শোষণের ঝুঁকি আছে।'

সরকারের বিবেচনার জন্য সেখানে ৩৮টি 'সংস্কার নির্দেশনা' প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও'নিল ২টি নির্দেশনা ঘোষণা করেছেন।

প্রথমত, ১ জুলাই থেকে নিয়োগকর্তার কাছ থেকে স্পন্সরশিপ পাওয়া আবেদনকারীর ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, অস্থায়ী দক্ষ শ্রমিকের আয় বছরে কমপক্ষে ৭০ হাজার ডলারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগে এটি ছিল ৫৩ হাজার ডলার।'

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও'নিল পর্যালোচনাটি প্রকাশের দিনে একটি বিবৃতিতে বলেন, আলবেনিজ সরকার যে ধরণের মাইগ্রেশন সিস্টেম তৈরি করতে চায় এটি তারই একটি উদ্যোগ।'

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন কর্মসূচি অত্যন্ত দক্ষ অভিবাসীদের আকৃষ্ট করতে এবং ব্যবসায়িদের আগ্রহী করতে ব্যর্থ হচ্ছে। একই সময়ে, এটি পদ্ধতিগত শোষণের সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং অস্থায়ী নিম্নশ্রেণীর উদীয়মান হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করেছে। অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পদ্ধতি অভিবাসীদের একটি দলকে স্থায়ীভাবে অস্থায়ী করছে।'

সাবেক পাবলিক সার্ভিস অফিসার মার্টিন পারকিনসনের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার মাইগ্রেশন সিস্টেমের যে পর্যালোচনা করা হয়েছে তাতে দেখা গেছে যে কিছু দিক ভালোভাবে কাজ করলেও মূল ক্ষেত্রগুলো খুব দুর্বল।

অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন বিভাগের সাবেক উপসচিব আবুল রিজভী বলেন, 'দুটি পরিবর্তনই ইতিবাচক। আমি মনে করি দক্ষ অস্থায়ী প্রবেশকারীদের জন্য স্থায়ী বসবাসের পথ পরিষ্কার করা সত্যিই একটি ভাল উদ্যোগ। ২০১৩ সাল থেকে ন্যূনতম বেতন ধরে রাখা একটি 'খারাপ সিদ্ধান্ত' ছিল। যা অভিবাসী এবং অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য নেতিবাচক ফলাফলের দিকে পরিচালিত করেছিল।'

দ্বিতীয়ত, সরকার বলেছে এটি বছরের শেষ নাগাদ সমস্ত দক্ষ অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করার সুযোগ দেবে। এটিও ভালো উদ্যোগ।

স্টুডেন্ট ভিসা পরিবর্তন

কর্মশক্তির ঘাটতি মোকাবিলায় কোভিড-১৯ মহামারি জুড়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাজের সীমাবদ্ধতাগুলো শিথিল করা হয়েছিল। ভিসা নীতি পরিবর্তনের ফলে স্টুডেন্ট ভিসাধারীদের সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও ভিসা সাবক্লাস ৪৮৫ টেম্পোরারি গ্র্যাজুয়েট ভিসাধারীরা অস্ট্রেলিয়ায় দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকতে পারবেন।

স্নাতক ডিগ্রি গ্র্যাজুয়েটরা ২ বছরের বেশি, মাস্টার্স ডিগ্রি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য ৫ বছর (আগে ছিল ৩ বছর) এবং ডক্টরাল স্নাতকদের জন্য ৬ বছর (আগে ছিল ৪ বছর) থাকার সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে।

কাজের ছুটির ভিসায় পরিবর্তন

ওয়ার্কিং হলিডে ভিসাধারীদের অনুমতি ছাড়াই একই নিয়োগকর্তা বা সংস্থার জন্য ৬ মাসের বেশি সময় ধরে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার যে নীতি ছিল সেটি ১ জুলাই শেষ হবে। মহামারি চলাকালীন শ্রম ঘাটতি মেটাতে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ৬ মাসের কাজের সীমাবদ্ধতা সাময়িকভাবে শিথিল করা হয়েছিল।

তবে ১ জুলাইয়ের আগে সম্পাদিত কোনো চুক্তি থাকলে তা গণনা করা হবে না। অর্থাৎ ওয়ার্কিং হলিডে ভিসাধারীরা যেকোনো নিয়োগকর্তার জন্য অতিরিক্ত ১ মাস পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন, যদি সেই কাজটি ১ জুলাইয়ের আগে শুরু হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পর্যালোচনায় দক্ষ শ্রমিকদের স্থায়ী বসবাসের সুযোগের সুপারিশ করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ গত অক্টোবরে তার সরকারের প্রথম বাজেটে দেশের অভিবাসন কর্মসূচিতে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করেছেন। ভিসা প্রক্রিয়াকরণসহ অন্যান্য কার্যক্রমের জন্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরকে ৪ বছরের জন্য অতিরিক্ত ৫৭৬ মিলিয়ন ডলার অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Banks see sluggish deposit growth as high inflation weighs on savers

Banks have registered sluggish growth in deposits throughout the current fiscal year as elevated inflation and an economic slowdown have squeezed the scope for many to save, even though the interest rate has risen.

14h ago