মিশরে বাংলাদেশিদের ঈদুল আজহা উদযাপন

ঈদের জামাতে মিশরীয়দের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও নামাজে অংশ নিচ্ছেন। ছবি: আফছার হোসাইন
ঈদের জামাতে মিশরীয়দের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও নামাজে অংশ নিচ্ছেন। ছবি: আফছার হোসাইন

নীলনদ আর পিরামিডের দেশ মিশরে উদযাপন হলো পবিত্র ঈদুল আজহা।

আজ বুধবার রাজধানী কায়রোর প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদ মুসুল্লিরা আল-আজহার, আমর ইবনুল আস, সাঈদা জয়নবসহ দেশটির সব মসজিদ ও ঈদগাহে জামাতে নামাজ আদায় করেন।

মিশরীয় রীতি অনুযায়ী, ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই 'আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ' ধ্বনিতে মসজিদ-ঈদগাহে আসতে থাকেন মুসল্লিরা। ভোরের আলো ফোটার আগেই পুরুষের সঙ্গে শিশু ও নারীরাও জমায়েত হন।

সূর্যোদয়ের ঠিক ২০ মিনিট পর সারাদেশের মসজিদে একযোগে ঈদের জামাত শুরু হয়। ইমাম প্রথম রাকাতে ৭ তাকবীর ও দ্বিতীয় রাকাতে ৫ তাকবীরের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে ইমাম যথারীতি খুতবা দেন। তবে এ দেশে বেশিরভাগ মুসুল্লি নামাজের সালাম ফিরিয়েই মসজিদ ও ঈদগাহ ছেড়ে বের হয়ে আসেন। 

শাফী মাজহাবের অনুসারী মিশরীয়রা নামাজের পর ইমামের সঙ্গে হাত তুলে মোনাজাত পড়েন না এবং ঈদ উপলক্ষে তাদেরকে বাংলাদেশের মুসুল্লিদের মতো কোলাকুলি করতেও দেখা যায় না।

মিশরে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের নিজ নিজ এলাকার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন।‌ দেশটির বিভিন্ন শহরে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই রাজধানী কায়রোর বড় মসজিদগুলোতে ঈদের নামাজ আদায় করতে আসেন।

ঈদের জামাতে মিশরীয়দের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও নামাজে অংশ নিচ্ছেন। ছবি: আফছার হোসাইন
ঈদের জামাতে মিশরীয়দের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও নামাজে অংশ নিচ্ছেন। ছবি: আফছার হোসাইন

নামাজ শেষ হওয়ার পর রাস্তায় কসাইদের হাঁকডাক শোনা যায়। তারা 'গাজ্জার গাজ্জার' বলে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। 'হেদাইয়া' (হাদিয়া) বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কোরবানির পশু জবাই করে কেটে দিয়ে যান তারা। একটি খাসি/ দুম্বা জবাই, চামড়া ছাড়ানো ও বড় বড় টুকরো করে কেটে দেওয়ার হাদিয়া বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার ৫০০। গরু, মহিষ ও উটের ক্ষেত্রে তা ৩ হাজার টাকা।

দিন গড়াতে থাকলে ধীরে ধীরে সড়কগুলোতে নেমে আসে ছেলে-বুড়ো সবাই। কোরবানির পশুর সামনে তারা ভিড় জমান। শিশুদের জন্য নানা ধরনের খেলনা ও বেলুন নিয়ে পসরা সাজায় বিক্রেতা।

নারীদের দেখা যায় গয়না ফেরিওয়ালার কাছ থেকে দরদাম করে কেনাকাটা করতে। মিশরে ঈদ-উল-আজহাকে বলা হয় 'ঈদ-ইল-কিবর' বা বড় ঈদ। ঈদের জামাতের পর থেকেই উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো দেশ। নানা ধরনের আয়োজন করা হয় দেশজুড়ে।

এ দেশের দাতব্য সংস্থা ও ধনী ব্যক্তিরা গরীবদের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কোরবানির মাংস বিতরণ করে থাকে। এ দিনে সবাই পরিবারপরিজন ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দেখা হলেই বলে, আরবি ভাষায় শুভেচ্ছা জানান, যার অর্থ, 'বছরটি আপনার ভাল কাটুক'।

ঈদের জামাতে মিশরীয়দের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও নামাজে অংশ নিচ্ছেন। ছবি: আফছার হোসাইন
ঈদের জামাতে মিশরীয়দের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও নামাজে অংশ নিচ্ছেন। ছবি: আফছার হোসাইন

মিশরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম এক বার্তায় প্রবাসীদের পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

লেখক: মিশরপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক

 

Comments

The Daily Star  | English
government decision to abolish DSA

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

12h ago