অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমে বাংলাদেশি যুবকের ভোট না দেওয়ার মর্মান্তিক গল্প
অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান গণমাধ্যম এবিসির অনলাইন সংস্করণে গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশি যুবক মোহাম্মদ সজল হোসেন এবারের নির্বাচনে কেন ভোট দেননি, সেই গল্পই মূলত ওই প্রতিবেদনের প্রধান বিষয়।
সংবাদমাধ্যমটির দক্ষিণ এশিয়া সংবাদদাতা মেঘনা বালি, ঢাকার তানবিরুল মিরাজ রিপন এবং সোম পতিদারের লেখা ওই প্রতিবেদনে শুরুতেই বাংলাদেশে পুলিশ হেফাজতে একটি মৃত্যুর ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ সজল হোসেনের বাবা সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে হেফাজতে মারা গেলে, তিনি সে কথা কাউকে জানাননি।
তিনি মনে করেছিলেন যে, তিনি যদি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেন তাহলে তারা তার বাবার মরদেহ দেবে না এবং তিনি বাবাকে দাফনের সুযোগ হারাবেন।
সজল হোসেন বলেন, 'বিচার ব্যবস্থার ওপর আমার বিশ্বাস নেই। এই দেশে ন্যায়বিচার হয় না।'
প্রতিবেদনে আরও লেখা হয়, দুই মাস আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের বিরুদ্ধে করা সমাবেশের পর থেকে হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গণগ্রেপ্তার করা হয় তখন পুলিশ সজলের বাবা চা-দোকানদার ফজলুর রহমান কাজলকেও তুলে নিয়ে যায়।
এতে বলা হয়, 'গ্রেপ্তারের একদিন পর ফজলুর রহমান কাজল হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং তাকে কারাগার থেকে একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি মারা যান।'
সজল হোসেন প্রতিবেদকদের বলেন, 'আমার বাবার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তিনি মেঝেতে শুয়ে ছিলেন। তার হাতকড়া পরানো ছিল এবং তার পাও বাঁধা ছিল।'
যদিও পরিবার কখনোই নিশ্চিতভাবে জানতে পারেনি যে কি ঘটেছে। তারা জানান, ফজলুর রহমান আগে কখনো হৃদরোগে আক্রান্ত হননি।
পরিবারের বিশ্বাস, ফজলুরকে কারাগারে মারধর করা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া হয়নি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, 'তিন দশকের বেশি সময় ধরে ফজলুর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সক্রিয় সংগঠক ছিলেন।'
মৃত ফজলুর রহমান কাজলের ছেলে বিশ্বাস করে, একমাত্র রাজনৈতিক কারণে তার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় এসেছে। এটা একনায়কতন্ত্র। আমি ভোট দেইনি। আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে, তাহলে আমি কীভাবে ভোট দেই? এটা আমাদের মানবাধিকারের লঙ্ঘন।'
Comments