১১ ব্যাংকের ৩৩ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি

বড় ধরনের মূলধন ঘাটতির জন্য ব্যাংকগুলোর দুর্নীতি এবং সুশাসনের অভাবকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
১১ ব্যাংকের ৩৩ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি

দেশের ১১টি ব্যাংক গত মার্চে ৩৩ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকার যৌথ মূলধন ঘাটতির মুখে পড়েছে। যা তার আগের ৩ মাসের তুলনায় ৯.৩ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ক্রমাগত অনিয়ম এবং সুশাসনের অভাবে ব্যাংকগুলোতে এই প্রভাব পড়েছে।

মূলধন ঘাটতির সম্মুখীন হওয়া বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী, জনতা, সোনালী, বেসিক ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংকে গত ডিসেম্বরে তহবিল ঘাটতি ছিল ৩০ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা।

বড় ধরনের মূলধন ঘাটতির জন্য ব্যাংকগুলোর দুর্নীতি এবং করপোরেট সুশাসনের অভাবকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

মার্চ মাস পর্যন্ত ১১টি ব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল সবচেয়ে বেশি, ১৪ হাজার ০৯৩ কোটি টাকা।

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা। এ ছাড়া রূপালী ব্যাংকে ছিল ২ হাজার ৫৭৪ কোটি এবং জনতা ব্যাংকে ২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা।

বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উদ্বেগজনক পরিস্থিতি হচ্ছে, যেসব ব্যাংকের মূলধনের ঘাটতি বেশি তাদের আর্থিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে।'

বিশাল অনুপাতের খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

২০২৩ সালের প্রথম ৩ মাসে খেলাপি ঋণ ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২১ কোটি টাকা হয়েছে। ৩ মাস আগের তুলনায় ব্যাংকিং খাতে নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) বেড়েছে ৯ শতাংশ এবং এক বছর আগের তুলনায় ১৬ শতাংশ।

মার্চ মাস পর্যন্ত নন-পারফর্মিং লোনের অনুপাত দাঁড়িয়েছে বকেয়া ঋণের ৮.৮ শতাংশ। যা ডিসেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

ব্যাংকগুলোকে খেলাপি ঋণের বিপরীতে মোটা অংকের অর্থ বরাদ্দ রাখতে হয়, যা শেষ পর্যন্ত তাদের মূলধনে প্রভাব ফেলে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক কর্মকর্তা মনসুর আরও বলেন, 'সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে মূলধন ঘাটতি কমাতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া উচিত।'

তিনি বলেন, মালিক হিসেবে সরকারের উচিত রাষ্ট্র পরিচালিত ব্যাংকগুলোতে মূলধন বিনিয়োগ করা।

'তবে এই ধরনের বিনিয়োগ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তার কারণ তহবিল সাধারণ মানুষের পকেট থেকে আসবে। তাই, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত মূলধন ঘাটতির সম্মুখীন বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বসে তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য একটি কৌশল প্রণয়ন করা।'

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন 11 banks facing a capital shortfall of Tk 33,575cr

 

Comments