২০২২-২৩ অর্থবছর

ওষুধ রপ্তানি কমেছে ৭ শতাংশ

বাংলাদেশের ওষুধ
২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ রপ্তানি কমেছে। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাবে বেশিরভাগ স্বল্পোন্নত দেশে ডলার ঘাটতির কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ রপ্তানি কমেছে ৭ শতাংশ।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে, গত অর্থবছরে ওষুধ রপ্তানি হয়েছে ১৭ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে এটি ছিল ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মঞ্জুরুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বাংলাদেশ মূলত স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোয় ওষুধ রপ্তানি করে থাকে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাব ও বাংলাদেশ থেকে ওষুধ আমদানিকারী দেশগুলোয় ডলার সংকটের কারণে গত অর্থবছরটি দেশের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দিক থেকে চ্যালেঞ্জিং ছিল।

রপ্তানির অভাবে দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারকরা আশানুরূপ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছেন না।

এলসি খোলার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধের মুখে কাঁচামাল আমদানি কমে যাওয়ায় এ শিল্প অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ছাড়াও, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে ওষুধ উৎপাদন ব্যয় বেশি ছিল, যা এই শিল্পকে সংকটের দিকে ঠেলে দেয়।

মঞ্জুরুল আলমের মতে, বাংলাদেশ থেকে ওষুধ আমদানি করা ৩টি প্রধান দেশের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়ায় তা রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

দেশের অন্যতম শীর্ষ ওষুধ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার ওয়াসিম হায়দার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রেতারা বর্তমান মূল্যের চেয়ে কম দাম দিতে চাচ্ছেন।'

'রপ্তানি কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ হলো আমরা কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারছি না,' যোগ করেন তিনি।

ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের পূর্বাভাসের কথা উল্লেখ করে ওয়াসিম হায়দার বলেন, 'চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাজার মন্দা থাকবে। তারপর ধীরে ধীরে তা চাঙ্গা হতে পারে।'

তবে বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে দেশের অন্যতম শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রেনাটা লিমিটেড।

রেনাটা লিমিটেড কোম্পানি সেক্রেটারি মো. জুবায়ের আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের পণ্যের প্রচারের চেষ্টা করেছি। নতুন ক্রেতা খোঁজার পাশাপাশি নতুন নতুন দেশে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। এটি আমাদের রপ্তানি স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করেছে।'

রপ্তানির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হওয়ার আরেকটি কারণ হলো প্রতিষ্ঠানটি করোনার ওষুধ রপ্তানিতে বেশি গুরুত্ব দেয়নি।

রেনাটার আন্তর্জাতিক বিপণন টিম প্রায়ই আমদানিকারক দেশগুলো পরিদর্শন করে তাদের ওষুধ যথাযথ প্রয়োগের বিষয়ে পরামর্শ দেয়। এটি বিশ্ববাজারে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম বাড়িয়েছে।

পাশাপাশি, মুনাফা অর্জনের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটি বাজার সম্প্রসারণে বেশি মনোযোগী।

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মঞ্জুরুল আলম বলেন, 'এখন আমরা প্রায় ৪০ দেশে ওষুধ রপ্তানি করছি। আমাদের ৬৩টি পণ্যের বায়ো-ইকুইভ্যালেন্ট সনদ আছে। অর্থাৎ, আমাদের জেনেরিক সংস্করণটি মূল সংস্করণের মতো।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy

The number of Bangladeshis crossing the perilous Mediterranean Sea to reach Italy has doubled in the first two months this year in comparison with the same period last year.

5h ago