প্রথমবারের মতো অর্থনৈতিক শুমারিতে অনলাইন ব্যবসা
এ বছরের গণনায় প্রথমবারের মতো যুক্ত হতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়ি থেকে পরিচালিত অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা। এর ফলে ডিজিটাল অর্থনীতির আকার সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত ৭ জুলাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৩ প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু করে। গণনাকারীরা আগামী ২৬ জুলাই পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িভিত্তিক অনলাইন ব্যবসাকে তালিকাভুক্ত করবে।
প্রকল্প পরিচালক এস এম শাকিল আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর ১৪ ধরনের প্রশ্ন থাকলেও ২০১৩ সালে ছিল চার ধরনের। প্রথমবারের মতো সব ধরনের ই-কমার্স কার্যক্রমের তালিকা হবে।'
এই উদ্যোগটি দেশে অনলাইনে পরিচালিত অর্থনৈতিক কার্যক্রমেরই প্রতিফলন। সম্প্রতি, বিশ্বব্যাপী ভার্চুয়াল ব্যবসা প্রসারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে ই-কমার্স, এফ-কমার্স, ই-বাণিজ্য ও ফ্রিল্যান্সিং বেড়েছে।
এসএম শাকিল আক্তার আরও বলেন, 'আমরা এই গণনায় সব অনানুষ্ঠানিক খাতকে আনতে চাই।'
পরিসংখ্যান ব্যুরো এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে গণনার তালিকা প্রকাশ করছে। আগামী ডিসেম্বরে ১৫ দিনের গণনা শুরু হবে। তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। কম্পিউটারে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
দেশে প্রথম অর্থনৈতিক গণনা হয় ১৯৮৬ সালে। দ্বিতীয় জাতীয় জরিপ হয় ২০০১-২০০৩ সালে। তৃতীয়টি হয় ২০১৩ সালে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম অনলাইন বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে যুক্ত করার বিষয়ে পরিসংখ্যান ব্যুরোর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, 'এতে নতুন মাত্রা যোগ হবে।'
'নীতিনির্ধারক ও গবেষকদের জন্য নানা বিষয়ে হালনাগাদ তথ্যের অভাব আছে,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'অর্থনীতির পরিধি বাড়ছে। এটি বহুমুখী হচ্ছে। যদি তথ্য পুরোনো হয় ও অর্থনীতি করোনা মহামারির সময়ের মতো ধাক্কা খায়, তাহলে সরকারের পক্ষে গণনার জন্য ভিত্তি বছর নির্ধারণ এবং বিশ্বাসযোগ্য তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপন করা কঠিন হয়ে পড়ে।'
আদমশুমারি সাধারণত প্রতি ১০ বছরে একবার হয়। এটি ব্যয়বহুল। তাই তথ্য হালনাগাদ করতে প্রতি দুই বছর পর পর গণনার কথা ভাবতে সরকারকে তাগিদ দেন এই অর্থনীতিবিদ।
অর্থনীতির পরিষ্কার চিত্র পেতে নানান উপখাত খোঁজার পরামর্শও দেন তিনি।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগামী জানুয়ারিতে জরিপের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করা হতে পারে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে কমপক্ষে আরও ছয় মাস লাগবে।'
তিনি আরও বলেন, 'চতুর্থ অর্থনৈতিক গণনার প্রকল্পটি আগেই নেওয়া হয়েছিল। অনুমোদন পেতে কিছুটা দেরি হয়।'
মধ্যমেয়াদি জরিপ সম্পর্কে এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, 'পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পরিসংখ্যান ব্যুরো ইতোমধ্যে কিছু জরিপ করেছে। কয়েকটি খাত সম্পর্কে তথ্য নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে আমরা বিষয়টি বিবেচনা করব।'
গণনা প্রকল্পে সরকারের খরচ হবে ৫৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তা দেওয়া হবে।
Comments