মেঘনার হাত ধরে বাজারে কিয়া’র ৩ মডেলের গাড়ি

কিয়া গাড়ি
গাজীপুরে কিয়া গাড়ির সংযোজন প্ল্যান্ট। ছবি: সংগৃহীত

মেঘনা গ্রুপের মেঘনা অটোমোবাইলস দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত অটোমোবাইল নির্মাতা কিয়ার স্থানীয়ভাবে সংযোজিত তিনটি স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল (এসইউভি) বিক্রি শুরু করেছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, তিনটি গাড়ির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শিগগির অনুষ্ঠিত হবে।

মেঘনা অটোমোবাইলসের নির্বাহী পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এসইউভিগুলো হলো ১৫০০ সিসির সেলটস, ১৫০০ সিসি ক্যারেনস ও ২০০০ সিসি স্পোর্টেজ।

গত মে মাসে ঢাকা মোটর শোতে সেলটস ও ক্যারেন্সের মডেল প্রদর্শিত হয়।

আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, 'মেঘনা অটোমোবাইলস ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) থেকে গাড়িগুলোর টাইপ সার্টিফিকেশন পেয়েছে।'

স্থানীয়ভাবে সংযোজিত গাড়ি বাজারে বিক্রি করার জন্য টাইপ সার্টিফিকেশন বাধ্যতামূলক।

তিনি আরও বলেন, 'আমরা এখন আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়িগুলো চালুর জন্য প্রস্তুত। আমাদের লক্ষ্য আমদানি করতে যে খরচ হয় এর তুলনায় কম দামে নতুন গাড়ি বিক্রি করা যাবে।'

গাজীপুরের বরমী ইউনিয়নে ২৭৫ কোটি টাকা খরচে ১৫ একর জমিতে কমপ্লিটলি নকড ডাউন (সিকেডি) গাড়ির জন্য মেঘনা অটোমোবাইলসের অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্ট করা হয়েছে।

সম্পূর্ণ বিল্ট-আপ (সিবিইউ) গাড়ি হিসেবে আমদানি করা সেলটসের দাম প্রায় ৫২ লাখ টাকা। স্থানীয়ভাবে সংযোজিত সেলটসের দাম প্রায় ৪৩ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

একইভাবে স্থানীয়ভাবে সংযোজিত স্পোর্টেজের দাম ৫৮ লাখ টাকা। সিবিইউর দাম ৭৮ লাখ টাকা।

আমদানি করা সিবিইউর তুলনায় স্থানীয়ভাবে সংযোজিত নতুন গাড়ির দাম ১০-১২ লাখ টাকা কম হবে বলে আশা করছেন তিনি।

ডলারের বিপরীতে টাকার দাম অনেক কমে যাওয়ায় প্রতি গাড়ির দাম কমেছে মাত্র আট লাখ টাকা।

আনিসুজ্জামান চৌধুরীর মতে, দেশের অটোমোবাইল নীতিমালা অনুযায়ী সংযোজনের জন্য যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক কম।

স্থানীয়ভাবে সংযোজিত কিয়া গাড়ির গুণগত মান সম্পর্কে তার ভাষ্য, এটি নিশ্চিত করতে কোরিয়ার প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানরা গাজীপুর অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্ট প্রথম দুই বছর পরিচালনা করবে।

সে সময়ে দেশের প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের দক্ষতা বাড়ানো ও গুণগত মান নিশ্চিত সম্ভব হবে বলে আশা করছে মেঘনা অটোমোবাইলস।

বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ অটোমোবাইল প্রতিষ্ঠান হুন্দাই, মালয়েশিয়ার প্রোটন ও জাপানের মিতসুবিশি বাংলাদেশে যাত্রীবাহী গাড়ি সংযোজন করছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, আমদানি করা রিকন্ডিশন্ড জাপানি গাড়ি স্থানীয় বাজারে দাপট দেখাচ্ছে। নতুন গাড়ির বাজার প্রায় ১৮ শতাংশ।

বাজার মূল্যায়নের কথা উল্লেখ করে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, 'ক্রেতার সচেতনতা ও ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে ২০৩০ সালের মধ্যে নতুন গাড়ি বাজারে আধিপত্য বিস্তার করবে।'

তিনি আরও বলেন, 'নতুন গাড়ি কেনার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত গ্রাহকদের ফিটনেস সার্টিফিকেট নবায়ন করতে হবে না। বিপরীতে, রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বার্ষিক ফিটনেস শংসাপত্র নবায়ন জরুরি।'

বিআরটিএ'র তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সাল থেকে দেশে প্রতি বছর গড়ে ২২ হাজার থেকে ২৪ হাজার যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রি হচ্ছে।

আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, 'কিয়া ও মেঘনা অটোমোবাইলস যৌথভাবে নতুন গাড়ির ক্রমবর্ধমান বাজার পর্যবেক্ষণের পর বাংলাদেশে গাড়ি সংযোজন করেছে। মেঘনার বছরে সাত হাজার গাড়ি সংযোজনের সক্ষমতা থাকলেও প্রাথমিকভাবে বছরে সাড়ে তিন হাজার গাড়ি সংযোজন করা হবে।'

এ ছাড়া, মেঘনা সারাদেশে খুচরা যন্ত্রাংশ ও পর্যাপ্ত সার্ভিস সেন্টারের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করবে।

Comments

The Daily Star  | English

Eid morning in 6 pictures

The morning of Eid-ul-Azha follows old, well maintained patterns

53m ago