তরল দুধের দামে বেড়েছে সংসারের খরচ

তরল দুধের দাম আবারও বেড়েছে। তরল দুধের শীর্ষ উৎপাদকরা এক লিটার প্যাকেটে ১০ টাকা ও আধা লিটারের প্যাকেটে পাঁচ টাকা দাম বাড়িয়েছে।
গত ২১ মার্চ রাষ্ট্রীয় দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্কভিটা) তরল দুধের দাম বাড়ায়।
আধা লিটার প্যাকেটের দুধের দাম ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা ও এক লিটার প্যাকেটের দুধের দাম ৯০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে আড়ং ও প্রাণ একইভাবে তাদের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।
রাজধানীর পল্লবী এলাকার বাসিন্দা কিরণ মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে বাজারে নিত্যপণ্যের পাশাপাশি আরও অনেক পণ্যের দাম বেশি। দুধের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসারের খরচ আরও বেড়েছে।'
উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে সরকার দুধের দাম বাড়ানো এড়াতে পারত বলে মনে করেন তিনি।
ঢাকার ফার্মগেটের তেজতুরী বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী সাব্বির হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল একজন পাঁচ লিটার দুধ কিনতে এসে দাম বাড়ার কারণে চার লিটার কিনেছেন।'
এ দিকে, ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমলেও পণ্য ও সেবার দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমেই কমছে। দেশে টানা দুই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি নয় শতাংশের বেশি।
মিল্কভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত চার-পাঁচ মাস ধরে প্রতি লিটার দুধ আট টাকা লোকসানে বিক্রি হচ্ছে। খামারিদের জন্য কয়েক দফা দাম বাড়িয়েছি। খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়াতে পারিনি।'
তিনি আরও বলেন, 'দাম বাড়ানোর প্রস্তাব তিন-চার মাস আগে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। কয়েক দফা পর্যালোচনার পর গত বৃহস্পতিবার অনুমোদিত পাওয়া যায়।'
এর আগে গত নভেম্বরে মিল্কভিটার প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো লিটারপ্রতি ১০ টাকা বাড়িয়ে ১০০ টাকা করেছিল।
মিল্কভিটা এই সময়ে গত বছর প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ ২৫ হাজার লিটার দুধ বিক্রি করলেও গতকাল শনিবার বিক্রি করেছে এক লাখ ৩০ হাজার লিটার দুধ।
খামারিরা যে দামে মিল্কভিটাকে দুধ সরবরাহ করে, স্থানীয় বাজারেই এর তুলনায় দাম বেশি। ফলে প্রতিষ্ঠানটির দুধ সংগ্রহের পরিমাণ কমেছে বলে জানান জাহিদুল ইসলাম।
২০২৪ সালের নভেম্বরে আড়ং প্রতি লিটার তরল দুধের দাম ১০ টাকা ও আধা লিটারে পাঁচ টাকা দাম বাড়ায়।
আড়ং দুধের মূল প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজের ঊর্ধ্বতন পরিচালক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গবাদি পশুর খাবারসহ অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় তরল দুধের দাম বাড়ানো জরুরি ছিল।'
তিনি জানান, ব্র্যাক ডেইরি ২০২২ সালের জুলাই থেকে পণ্যের দাম সমন্বয় করছে। গত দুই বছরে প্যাকেজিং, কার্টন ও খুচরা যন্ত্রাংশসহ কাঁচামালের দাম ২০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খামারিদের উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণে দুধের দাম বেড়েছে। ফলে খুচরা পর্যায়েও দাম বাড়ানো হয়েছে।'
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে—দেশে বার্ষিক দুধের উৎপাদন ৯৯ লাখ টন। চাহিদা দেড় কোটি টনে পৌঁছেছে। দেশে শূন্য দশমিক ১২ থেকে শূন্য দশমিক ১৪ মিলিয়ন টন গুঁড়ো দুধ আমদানি করা হয়।
Comments