ভৈরবের প্রাণ যায়

ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

চিরায়ত বাংলার নিসর্গ চিত্রিত হয়েছে যে কাব্যগ্রন্থে, সেই 'রূপসী বাংলা'র কবি কবি জীবনানন্দ দাশ অনেককাল আগেই লিখেছিলেন, '…মাঝপথে জলের উচ্ছ্বাসে/বাধা পেয়ে নদীরা মজিয়া গেছে দিকে দিকে- শ্মশানের পাশে/আর তারা আসে নাকো;'।

জীবনানন্দ জানতেন 'নদীর মানে স্নিগ্ধ শুশ্রূষার জল,'। কিন্তু দখল-দূষণ আর অপরিকল্পিত উন্নয়নের শিকার হয়ে দেশের আরও অনেক নদীর মতো যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার ওপর দিয়ে বয়ে চলা ভৈরব নদের শ্বাসও এখন বন্ধ হওয়ার দশা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) হিসাবে, খুলনা থেকে নওয়াপাড়া পর্যন্ত ভৈরবের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে খুলনা থেকে শিরোমণি পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার ভৈরবের অবস্থা মোটামুটি ভালো। শিরোমণি থেকে নওয়াপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটার ভৈরবের অবস্থা বেশ খারাপ। আর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা নওয়াপাড়া নদীবন্দরের প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার এলাকা।

এই নদীবন্দর এলাকায় দখল-ভরাট ও অপরিল্পিতভাবে জেটি নির্মাণের কারণে কোথাও কোথাও শীর্ণ আকার ধারণ করেছে ভৈরব। পরিবেশবাদীদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী–শ্রমিকদের দাবির পরও দখলমুক্ত হচ্ছে না নদের এই অংশ।

স্থল, নৌ, রেল—এই ত্রিমাত্রিক যোগাযোগের সুবিধায় দেশের অন্যতম বড় ব্যবসাকেন্দ্র হয়ে উঠেছে অভয়নগরের নওয়াপাড়া।

ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন, জর্ডান, কানাডা, সৌদি আরব, মরক্কো, অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় জাহাজে করে আমদানি করা সার, বিভিন্ন প্রকারের খাদ্যশস্য, কয়লা চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে আসে। সেখান থেকে ছোট জাহাজে করে তা নওয়াপাড়ায় আনা হয়।

প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ পণ্যবোঝাই জাহাজ নওয়াপাড়ায় ভৈরব নদে অবস্থান করে। সেখান থেকে নামানোর পর এসব পণ্য প্রতিদিন স্থলপথে এবং নদীপথে দেশের উত্তর, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে নেওয়া হয়।

গত সোমবার নওয়াপাড়া নদীবন্দর এলাকা থেকে ছবিটি তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী হাবিবুর রহমান

Comments

The Daily Star  | English
soybean oil price hike

Soybean oil price hike temporary: commerce adviser

Improved supply and increased competition will help bring down prices soon, he says

2h ago