বংশীতীরের বিপদ

বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অনুসারে নদীর তীর থেকে মাটি সংগ্রহ অবৈধ।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার চানপুর এলাকায় বংশী নদীর তীর থেকে অবাধে মাটি কাটছে প্রভাবশালীরা।
খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার কাজ চলছে। ছবি: স্টার

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার চানপুর এলাকায় বংশী নদীর তীর থেকে অবাধে মাটি কাটছে প্রভাবশালীরা। নিচু জমি ভরাটের জন্য প্রভাবশালীদের মাটি কাটার এই আয়োজন পুরো এলাকাটিকেই ভাঙনের ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে।

অথচ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অনুসারে নদীর তীর থেকে মাটি সংগ্রহ অবৈধ।

এই আইনের ১১ ধারায় বলা হয়েছে, ইজারা ব্যতীত কোনো বালুমহাল থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন, পরিবহন, বিপণন ও সরবরাহ করা যাবে না এবং এই মর্মে কোনো রাজস্বও আদায় করা যাবে না।

বংশী বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। নদীটি পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপন্ন হয়ে দক্ষিণে টাঙ্গাইল ও গাজীপুর জেলা অতিক্রম করে সাভারের কর্ণপাড়া ও ব্যাংকটাউনের পাশ দিয়ে আমিনবাজারে এসে তুরাগ নদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

নদীমাতৃক বাংলাদেশে মানুষের জীবনও নদীকেন্দ্রিক। এখানকার হাজার বছরের গ্রামীণ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতেও রয়েছে নদীর প্রভাব। নদী এখানে দেশ ও মানুষের মায়ার জননী, জীবন্ত সত্তা। কিন্তু বাংলাদেশের আরও অনেক নদ-নদীর মতো বংশীও দখল-দূষণের শিকার, অনেক জায়গায় মৃতপ্রায়।

নদী হত্যার এমন নানা কৌশল নিয়ে জীবনানন্দ তার বিখ্যাত 'পরিচায়ক' কবিতায় লিখেছিলেন, 'এই দিকে বিকলাঙ্গ নদীটির থেকে পাঁচ-সাত ধনু দূরে/মানুষ এখনো নীল, আদিম সাপুড়ে:/রক্ত আর মৃত্যু ছাড়া কিছু পায় নাকো তারা খনিজ, অমূল্য মাটি খুঁড়ে।'

বংশীতীরে খননযন্ত্র (এক্সাভেটর) দিয়ে মাটি কাটার এই ছবিটি সম্প্রতি তোলা।

Comments