সুখবর স্কুল ব্যাংকিংয়ে

ইলাসট্রেশন: সাদাফ
ইলাসট্রেশন: সাদাফ

শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুল ব্যাংকিং সেবার জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। দেশের অর্থনীতিতে বর্ধনশীল মূল্যস্ফীতির মতো প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও জুলাই মাসে এ ধরনের অ্যাকাউন্টের মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এ বছরের জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এসব অ্যাকাউন্টে ২ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন, যেটি এর আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি।

চলতি বছরের জুলাই মাসে স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতাধীন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ৩১ লাখ ৮৯ হাজারে দাাঁড়িয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বেশ কিছু ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ হাতে নেয়। এই উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রায় গতির সঞ্চার হয়েছে।'

ওই কর্মকর্তার ধারণা,  করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট মন্দা ও চলমান অর্থনৈতিক সংকট না থাকলে স্কুল ব্যাংকিং প্রকল্পের আওতায় অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ও মোট সঞ্চিতি আরও বেশি হতো। 

বর্তমানে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের একটি বড় অংশের আর্থিক পরিস্থিতি নাজুক। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগামী ধারার কারণে তাদের আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে।

মূল্যস্ফীতির সময় সাধারণত ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ কমতে থাকে। তবে বিষয়টি স্কুল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে পুরোপুরি ভিন্ন।

মহামারির প্রভাব কমাতে ২০২০ ও ২০২১ এর বেশিরভাগ সময়জুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছিল। ফলে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা বলেন, 'সব ধরনের বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও, স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের আওতায় থাকা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ও সঞ্চিতির পরিমাণ বেড়েছে, যা একটি ইতিবাচক বিষয়।'

শিক্ষার্থীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনা ও তাদেরকে আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে।

এই কার্যক্রমের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে টাকা জমানোর অভ্যাস তৈরি করা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় তাদের আরও উপযোগী করে তোলা।

এ পর্যন্ত ৫৫টি ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করেছে। ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে।

এই অ্যাকাউন্টগুলোর সঙ্গে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন- সব ধরনের ফিস ও চার্জের ক্ষেত্রে রেয়াত পাওয়া, বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া, ন্যুনতম স্থিতির বাধ্যবাধকতার ক্ষেত্রে ছাড় ও স্বল্প খরচে ডেবিট কার্ড পাওয়ার সুযোগ।

মাত্র ১০০ টাকা আমানত রেখেই এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।

বেসরকারি সিটি ব্যাংকের হেড অব ব্রাঞ্চেস সাইফুল আমিন জানান, তারা নগর অঞ্চলের তুলনায় পল্লী অঞ্চলে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্প্রসারণের দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, 'দ্য সিটি ব্যাংক শিক্ষার্থীদের মধ্যে টাকা জমানোর অভ্যাস তৈরি ও তাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনার জ্ঞানকে আরও বলিষ্ঠ করার লক্ষ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্প্রসারণ করছে।'

তার ভাষ্য, 'আমরা আমাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমের গতি বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছি, যার মধ্যে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের সম্প্রসারণ অন্যতম।'

সাইফুল আমিন আরও জানান, তাদের ব্যাংক ইতোমধ্যে সব শাখাকে অন্য কার্যক্রমের মতোই স্কুল ব্যাংকিংয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ''আমরা আশা করি আগামী দিনগুলোতে দ্য সিটি ব্যাংকের স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হবে।'

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Banning party activities: Govt amends anti-terror law

The interim government is set to bring the curtain down on the Awami League as a functioning political party.

5h ago