আবারও ন্যাশনাল ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সুশাসন নিশ্চিত করতে পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার কথা বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশে বলা হয়েছে।
ন্যাশনাল ব্যাংক

ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড পুনর্গঠনের মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি নতুন পর্ষদ গঠন করে।

আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সুশাসন নিশ্চিত করতে পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার কথা বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশে বলা হয়েছে।

গতকাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার, পরিচালক ও সিকদার গ্রুপের পারভীন হক সিকদার; স্বতন্ত্র পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম এবং সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম কামাল হোসেনকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

গত ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারকে এনবিএলের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

ন্যাশনাল ব্যাংকের স্পন্সর পরিচালক খলিলুর রহমানকে পরিচালনা পর্ষদের নতুন চেয়ারম্যান করে বিলুপ্ত পর্ষদের দুই পরিচালককে নতুন পর্ষদে রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াজুল করিম, ব্যবসায়ী আরশাদ মাহমুদ, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অধ্যাপক এ কে এম তোফাজ্জল হককে পরিচালক করা হয়েছে।

চবি অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট রত্না দত্ত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জহুরুল হুদাকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এক স্বতন্ত্র পরিচালক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না হওয়ার সিদ্ধান্তের পর আগের বোর্ডের সব স্বতন্ত্র পরিচালক গত বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেছেন।'

গত ৯ এপ্রিল ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ন্যাশনাল ব্যাংককে ইউসিবির সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একীভূতকরণ ইস্যুতে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালকরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

আর্থিক বিবরণী অনুসারে, ২০২৩ সালে এনবিএলের লোকসান হয়েছে এক হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। এটি আগের বছরের তিন হাজার ২৮৫ কোটি টাকা থেকে প্রায় ৫৪ শতাংশ কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। এটি এর মোট বিতরণ করা ঋণের ২৮ দশমিক ৯২ শতাংশ।

গত ২১ ডিসেম্বর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সুপারিশের ভিত্তিতে এনবিএলের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

Comments