ভোগান্তির আরেক নাম জামালপুর বিসিক

জামালপুর বিবিক
জলাবদ্ধতায় জামালপুর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। ছবি: স্টার

নানান দুর্ভোগে পড়ে কঠিন সময় পার করছেন জামালপুরের বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) মালিকরা।

জামালপুর পৌরসভার দাপুনিয়ায় ২৬ দশমিক ৩০ একর জমিতে বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৮০ সালের ১৮ ডিসেম্বর। এখানে ১৯৭ প্লটে বিভক্ত ৮২ ইউনিট আছে।

৮২ ইউনিটের মধ্যে ৫৬টিতে পণ্য উৎপাদন চলছে। ৬ ইউনিট বাস্তবায়নের অপেক্ষায়, ১২ ইউনিট বন্ধ ও ৮ ইউনিট নিয়ে মামলা চলছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শিল্পনগরীর অধিকাংশ ড্রেন বন্ধ থাকায় বিসিক ভবনের প্রধান ফটকসহ এর অধিকাংশ অংশে জলাবদ্ধতা রয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।

জামালপুর বিসিক
জামালপুর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) ভেতরের রাস্তা। ছবি: স্টার

বিসিক কর্তৃপক্ষ দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, জলাবদ্ধতা দূর করতে শিগগির ৫ হাজার ৯৩৫ মিটার ড্রেন সংস্কার করা হবে।

জামালপুর বিসিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক সম্রাট আকবর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে।'

ভুক্তভোগী মালিকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ছোট কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গুদামে আলু নষ্ট হচ্ছে।

লোকসানের পাশাপাশি কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।

রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গমের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারিফ অটো ফ্লাওয়ার মিল ইতোমধ্যে কয়েক মাস ধরে বন্ধ আছে।

এখানে গ্যাসের সুবিধা না থাকায় এবং বছরের পর বছর রাস্তা মেরামত না করায় শিল্পনগরীর ভেতরের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলেও তারা জানান।

চুক্তি অনুযায়ী প্রতিটি কারখানায় গ্যাস সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও তা এখনো হয়নি।

জামালপুর
জামালপুর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) ভেতরে প্লট। ছবি: স্টার

মালিকদের আরও অভিযোগ, তাদেরকে 'দ্বিগুণ' সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। জানান, এখানে তারা নানা রকম দুর্ভোগে পিষ্ট হচ্ছেন।

মালিকদের কাছ থেকে সার্ভিস ও হোল্ডিং চার্জ আদায় করা হলেও পৌরসভা আলাদাভাবে হোল্ডিং চার্জ আদায় করছে বলেও জানান তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মালিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চার্জ না দিলে পৌরসভা ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করে না।'

মেয়র সানোয়ার হোসেন সানু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি ভালোভাবে জানি না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারবো।'

শিল্পনগরীর ভেতরে ব্যক্তিগত 'রেস্টহাউস' তৈরির অভিযোগও রয়েছে। আলী নুর কোল্ড স্টোরেজের মালিক জমি ইজারা নিয়ে বসবাসের জন্য ৩ তলা ভবন তৈরি করেছেন।

আলী নুর কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্বাস হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটি রেস্টহাউস হিসেবে ব্যবহারের জন্য বিসিক থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে।'

জামালপুর বিসিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক সম্রাট আকবর বলেন, 'প্রথমে আমরা আলী নুর কোল্ড স্টোরেজের বাড়িটি বেআইনিভাবে তৈরি হওয়ায় তা ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলাম। পরে এর মালিক এটি অফিস হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি নেন। এখন তিনি তা ব্যক্তিগত রেস্টহাউস হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ পাচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

8h ago