ওয়ালটনের বিক্রি ও মুনাফা কমেছে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের অন্যতম শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের বিক্রির পাশাপাশি মুনাফাও কমেছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের অন্যতম শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের বিক্রির পাশাপাশি মুনাফাও কমেছে।

গত অর্থবছরে ওয়ালটনের বিক্রি ১৯ শতাংশ বা এক হাজার ৫৩১ কোটি টাকা কমে ছয় হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা হয়েছে। গত ১২ মাসে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা প্রায় ৩৬ শতাংশ বা ৪৩৪ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৮২ কোটি টাকায়।

প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় ৪০ টাকা ১৬ পয়সা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ৮৪ পয়সায়।

ওয়ালটনের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাব ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া এবং দেশে ডলারের তীব্র সংকটের কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরটি শুধু ওয়ালটনের জন্যই নয়, সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্যই চ্যালেঞ্জিং ছিল।'

ফলে, খরচ আগের বছরের তুলনায় অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত নিট মুনাফা অবিশ্বাস্য হারে কমেছে।

এতে আরও বলা হয়, 'রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও দেশে ডলারের তীব্র সংকট এখনো পুরোপুরি কেটে না যাওয়ায় আমরা ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কভাবে আশাবাদী আছি।'

প্রতিবেদনটি বলছে, 'করোনা মহামারির প্রভাব থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরুর ঠিক আগে ইউরোপে যুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতি ব্যাপক চাপে পড়েছে।'

প্রতিবেদন অনুসারে, ওয়ালটনের রপ্তানি আয় প্রায় অর্ধেক কমে ১২৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন মূল্যস্ফীতির চাপকে ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে তোলায় পণ্যের দাম বেড়েছে।

'শেষ পর্যন্ত, ইউরো ও ডলার উভয়ই স্থানীয় মুদ্রার তুলনায় শক্তিশালী হয়ে উঠে। সরবরাহকারীদের অর্থ পরিশোধে প্রতিষ্ঠানটির প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ক্ষতি হয়।'

চলতি বছর ওয়ালটনের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষতি ৫৪ শতাংশ বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার লোকসান হয়েছে ৪৬৯ কোটি টাকা। এটি আগের বছর এটি ছিল ৩০৪ কোটি টাকা।

প্রতিষ্ঠানটির ফ্রিজ, টেলিভিশন ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সের বিক্রি কমলেও এয়ার কন্ডিশনার এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম থেকে আয় বেড়েছে।

গত অর্থবছরে ওয়ালটনের এয়ার কন্ডিশনার বিক্রি ৩৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪৬ কোটি টাকায়।

অপরদিকে, ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটর বিক্রি ২৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৮১৪ কোটি টাকায়।

একইভাবে টেলিভিশন বিক্রি ৩৪ শতাংশ কমে ৫৩১ কোটি টাকা এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স ১০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৯৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের কোম্পানি সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মূল্যস্ফীতির উচ্চহারের কারণে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়ায় তারা বিলাসবহুল পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এ ছাড়াও, টাকার অবমূল্যায়নের কারণে বেশিরভাগ পণ্যের দাম সামঞ্জস্য করতে হয়েছিল। এ সব কারণে মানুষজন তাদের পুরোনো ফ্রিজ বা টেলিভিশন আরও এক বা দুই বছর রেখে দিতে চাচ্ছেন।'

গত বছর দেশে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এয়ার কন্ডিশনারের বিক্রি বেড়েছে বলে মনে করেন রফিকুল।

Comments