২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি জাহাজ ভাঙা হয়েছে বাংলাদেশে

জাহাজ ভাঙা
শ্রমিক, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও উপকূলীয় প্রাণবৈচিত্র্যের জন্য হুমকি হওয়া সত্ত্বেও জাহাজ ভাঙার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো প্রথম পছন্দ। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

২০২৪ ‍সালে সারাবিশ্বে যত জাহাজ ভাঙা হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জাহাজ ভাঙা হয়েছে বাংলাদেশে। যদিও সে বছর ডলার সংকট ও ধীরগতির অর্থনীতির কারণে ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম জাহাজ আমদানি হয়।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত জাহাজ ভাঙার তালিকায় বলা হয়েছে—গত বছর ১৩০টি পুরোনো ও পরিত্যক্ত জাহাজ ভাঙার জন্য বাংলাদেশে আমদানি করা হয়েছে। এটি আগের বছরের তুলনায় সাড়ে ২৩ শতাংশ কম।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী ৪০৯টি জাহাজ ভাঙা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫৫টি ভাঙা হয়েছে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোয়। গত বছর বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সাগর সৈকতে অনিরাপদ পরিবেশে ৮০ শতাংশ জাহাজ ভাঙা হয়েছে।

এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্মের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়—শ্রমিক, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও উপকূলীয় প্রাণবৈচিত্র্যের জন্য হুমকি হওয়া সত্ত্বেও জাহাজ ভাঙার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো প্রথম পছন্দ।

২০২৪ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় জাহাজ ভাঙতে গিয়ে নয় শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। অনিরাপদ কর্মপরিবেশের কারণে আরও ৪৫ শ্রমিক আহত হয়েছেন।

এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম বলছে, গত বছর জাহাজ ভাঙার ক্ষেত্রে অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনা হয়েছে বাংলাদেশে। চট্টগ্রাম সমুদ্র সৈকতে এসএন করপোরেশনে তেলের ট্যাংকার ভাঙার সময় বিস্ফোরণে ছয় শ্রমিক প্রাণ হারান। গুরুতর আহত হন আরও ছয়জন।

চট্টগ্রামে দেশের জাহাজ ভাঙার এলাকাগুলোয় ২০২১ সালে ২৮০টি পুরোনো জাহাজ আমদানি করা হয়েছিল। গত ছয় বছরে তা ছিল সর্বোচ্চ। এরপর থেকে আমদানি বাড়া-কমার মধ্যে থাকলেও সর্বোচ্চ ১৭০টি পুরনো জাহাজ আমদানি হয়েছে ২০২২ সালে।

বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সভাপতি মো. আবু তাহের দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডলার সংকটের কারণে আমদানি কমেছে। অভ্যন্তরীণ বাজার পরিস্থিতিও ভালো না। যে কারণে ভাঙা লোহার চাহিদা কমেছে।'

তিনি বলেন, 'স্টিল রি-রোলিং কারখানাগুলো আমাদের প্রধান ক্রেতা। সরকারি অনেক প্রকল্প বন্ধ থাকায় ইস্পাত কারখানাগুলোর ব্যবসা মন্দা। তাই আমাদের বিক্রি কমেছে। ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। ব্যবসার খরচ বাড়লেও ব্যবসা বাড়েনি।'

'চলতি ২০২৫ ‍সালেও ব্যবসা ভালো যাবে না' এমন আশঙ্কা করে আবু তাহের বলেন, 'নির্মাণ খাত চাঙা না হলে ইস্পাত-রডের কারখানাগুলো আমাদের কাছ থেকে পুরোনো লোহা কিনবে কেন?'

দেশে ১৫০ জাহাজ ভাঙার ক্ষেত্র আছে। চালু আছে প্রায় ৩০টি। এখন পর্যন্ত সাতটি প্রতিষ্ঠান জাহাজ ভাঙার 'পরিবেশবান্ধব' ইয়ার্ড হিসেবে ছাড়পত্র পেয়েছে। আরও ১৫টি 'পরিবেশবান্ধব' সনদ পাওয়ার কাজ চলছে।

Comments

The Daily Star  | English

Trump calls for Iran's 'unconditional surrender' as Israel-Iran air war rages on

Israel and Iran attacked each other for a sixth straight day on Wednesday, and Israeli air power reigns over Iran, but needs US for deeper impact

6h ago