খসড়া আয়কর আইন

যাদের দাখিল করতে হবে সম্পদ বিবরণী

নতুন আইনে অন্যসব প্রস্তাবনার মধ্যে যাদের ৪০ লাখ টাকার বেশি সম্পদ আছে, তাদেরকে সম্পদ ও দায়ের বিবরণী বাধ্যতামূলকভাবে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থার আধুনিকায়নের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নতুন আয়কর বিল উত্থাপন করতে পারে।

নতুন আইনে অন্যসব প্রস্তাবনার মধ্যে যাদের ৪০ লাখ টাকার বেশি সম্পদ আছে, তাদেরকে সম্পদ ও দায়ের বিবরণী বাধ্যতামূলকভাবে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

খসড়া আইনে করদাতাদের মধ্যে যারা বিদেশে কোনো সম্পদের মালিক হয়েছেন, তাদেরও সম্পদের বিবরণী দাখিল বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে।

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, বছরের যেকোনো সময় চিকিৎসা বা ধর্মীয় কারণ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে বিদেশ ভ্রমণে যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পদবিবরণী জমা দিতে হবে।

জানতে চাইলে এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, করদাতারা বছরে একবার আয়কর রিটার্ন জমা দেন। সেই সময় তাদেরকে সম্পদ ও দায়ের বিবরণীও জমা দিতে হবে।

প্রস্তাবটি সংসদে অনুমোদন পেলে বিদেশ ভ্রমণের সময় ইমিগ্রেশন চেকপয়েন্টে রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে না।

এনবিআরের আয়কর বিভাগের ওই কর্মকর্তা বলেন, 'কোনো করদাতা সম্পদবিবরণী দাখিল করেছেন কি না, তা যাচাই করার ক্ষমতা প্রস্তাবিত আইনে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়নি।'

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, মোটরযানের মালিক, কোনো সিটি করপোরেশনের বাড়ি, সম্পত্তি বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগকারী ব্যক্তি এবং কোম্পানির পরিচালকদের সম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করতে হবে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, দেশের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্যাক্স রিটার্নসহ তাদের সম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করতে হবে।

খসড়া আইনে করদাতাদের ট্যাক্স রিটার্নে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে তাদের সম্পদ ও দায় উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, যাদের বাংলাদেশে ৪০ লাখ টাকার কম সম্পদ আছে কিন্তু বিদেশে সম্পদ আছে, তাদের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে।

অনাবাসী বাংলাদেশিদেরও তাদের রিটার্নে বাংলাদেশে থাকা তাদের সম্পদ সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।

আয়কর আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের বাংলাদেশে তাদের সম্পদ ও দায় ট্যাক্স রিটার্নে দেখাতে হবে।

স্বামী বা স্ত্রী এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের যদি টিন নম্বর না থাকে, সেক্ষেত্রে পরিবারের করদাতাকে তাদের সম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করতে হবে।

বাংলায় খসড়া করা নতুন আয়কর আইন ১৯২২ সালের আয়কর আইন সংশোধন করে প্রণয়ন করা বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। আইনটিতে কর কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত আইনে হিসাব পদ্ধতি, অবমূল্যায়ন ও মর্টাইজেশন বিধিমালা, মূলধন লাভ সম্পর্কিত বিধান, অদৃশ্য সম্পদ থেকে আয়, স্থানান্তর মূল্য ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

Comments