আইএমএফের ঋণের ৬ শর্তের ২টি পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ

আইএমএফের ঋণ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সদর দপ্তর। ছবি: রয়টার্স

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য চলতি বছরের প্রথমার্ধে যে ৬ শর্ত দিয়েছিল এর মধ্যে ২টি পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ।

কেন বাংলাদেশ এই ২ শর্ত পালনে ব্যর্থ হয়েছে তা অর্থ মন্ত্রণালয় চিঠি লিখে ওয়াশিংটনভিত্তিক এই ঋণদাতা সংস্থাটিকে ব্যাখ্যা করেছে।

এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে দ্য ডেইলি স্টার এ তথ্য জানতে পেরেছে।

তারা জানান, গত মাসে আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসনের সঙ্গে যখন সংশ্লিষ্টদের কথা হয় তখন বাংলাদেশ বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছে।

জুন শেষে সরকার ন্যূনতম নিট আন্তর্জাতিক রিজার্ভ (এনআইআর) ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার ধরে রাখতে পারেনি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, এনআইআর লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার কমেছে কারণ জ্বালানি, সার ও খাদ্যদ্রব্য আমদানির জন্য সরকারকে রিজার্ভে হাত দিতে হয়েছিল।

ন্যূনতম রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আদায়ের প্রয়োজন ছিল অন্তত ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা।

ডলারের মজুদ ধরে রাখতে আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপের কারণে রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা কম আদায় হতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরবর্তীতে সরকার আইএমএফের কাছ থেকে শর্ত ২টি পূরণ থেকে অব্যাহতি চাইবে, যাতে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়া যায়।

কোনো দেশ পরিমাণগত কর্মক্ষমতা মানদণ্ড (কিউপিসি) শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ার পরও আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড যদি মনে করে যে ঋণ কর্মসূচিটি চালিয়ে নেওয়া যাবে তাহলে বাকি অর্থ ছাড়ের অনুমোদন আসতে পারে।

এমনটি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ, শর্ত পূরণে ব্যর্থতা খুব গুরুতর নয় বা অস্থায়ী ছিল বা সরকার এ বিষয়ে সংশোধনমূলক উদ্যোগ নিচ্ছে।

মিসড স্ট্রাকচারাল বেঞ্চমার্ক (এসবি) ও নির্দেশক লক্ষ্য (আইটি) অর্থ ছাড়ের জন্য প্রয়োজন হয় না। তবে সামগ্রিক কর্মসূচির পারফরম্যান্সের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি মূল্যায়ন করা হয়।

ন্যূনতম এনআইআর একটি কিউপিসি ও কর রাজস্ব ফ্লোর একটি নির্দেশক লক্ষ্য।

বাজেট, সামাজিক ব্যয়, উন্নয়নমূলক কাজে বিনিয়োগের মূলধন ও রিজার্ভ অর্থের সর্বোচ্চ সীমার মতো পরিমাণগত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার গত জুনের জন্য ৬ এসবি পূরণ করেছে।

জুনের জন্য এসবিগুলোর মধ্যে আছে সুদের হার নির্ধারণে করিডোর সিস্টেম গ্রহণ, আইএমএফের বিপিএমসিক্স সংজ্ঞা অনুসারে রিজার্ভের প্রতিবেদন প্রকাশ ও মুদ্রার বাজার-নির্ধারিত বিনিময় হার প্রবর্তন করা।

ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি কর্মপরিকল্পনা শেষ করার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন প্রকাশের কথা ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির অতিরিক্ত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্ব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ঋণ কর্মসূচির পরিমাণগত লক্ষ্যমাত্রা ও সংস্কার বাস্তবায়নের অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য কর্মসূচির প্রথম পর্যালোচনা সেপ্টেম্বরের শেষ বা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে।

Comments

The Daily Star  | English
public support for interim government

‘People asking us to stay for 5 more years’

Home Adviser Lt Gen (retd) Jahangir Alam Chowdhury yesterday said that people are telling them to stay for five more years.

4h ago