বিস্কুট বিক্রি করেই অলিম্পিকের আয় ২৫০০ কোটি টাকার বেশি

অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, অলিম্পিক, অলিম্পিকের বিস্কুট,
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

দেশের সবচেয়ে বড় বিস্কুট ও কনফেকশনারি কোম্পানি অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ প্রথমবারের মতো বিস্কুট ও কনফেকশনারি পণ্য বিক্রি করে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করেছে।

কোম্পানির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তাদের বিক্রি ২০ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা।

এর মধ্যে বিস্কুট, মিষ্টান্ন, বেকারি ও স্ন্যাকস পণ্য বিক্রি করে আয় হয়েছে ২ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। এই আয়ের মধ্যে ২৬ কোটি টাকার রপ্তানিও আছে। বাকি ৪৩ কোটি টাকা এসেছে ড্রাই সেল ব্যাটারি বিক্রি থেকে।

কিন্তু, ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় বিক্রি বেশি হলেও বিস্কুট, মিষ্টান্ন, বেকারি ও স্ন্যাকস পণ্য বিক্রির পরিমাণ ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭০৬ মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে।

কোম্পানিটির বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কাঁচামালের উচ্চ মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ প্যাকেটজাত পণ্যের দাম একই রাখলেও পরিমাণ কমিয়েছে।

এতে বলা হয়, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য করা একটি চলমান ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। বাজারে বিক্রি নিশ্চিত করতে একটি গ্রহণযোগ্য দাম ঠিক করার পাশাপাশি মুনাফার কাঙ্ক্ষিত মার্জিনের দিকে এগিয়ে যেতে এই কাজটি অপরিহার্য ছিল।

কোম্পানিটির হিসাব ও অর্থ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক সত্য রঞ্জন মণ্ডল বলেন, 'ময়দা, তেল ও চিনিসহ সব কাঁচামালের দাম বেড়েছে। কিন্তু, দাম যতটুকু বেড়েছে তা পুরোটাই ভোক্তাদের ওপর চাপানো হয়নি।

এছাড়া, গত দুই বছরে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে, যা কোম্পানির মুনাফা মার্জিনে প্রভাব ফেলেছে বলে জানান তিনি।

তারপরও কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে এবং এ বছর শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ভালো লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে ময়দার দাম ৭৫ শতাংশ, তেলের দাম ১৭ শতাংশ এবং চিনির দাম ৯১ শতাংশ বেড়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে কোম্পানিটির মুনাফা ২৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৫৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মুনাফা মার্জিন, অর্থাৎ বিক্রয়ের তুলনায় বার্ষিক মুনাফা হয়েছে ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ।

কোম্পানিটির মুনাফার মার্জিন ২০২০-২১ অর্থবছর, ২০১৯-২০ অর্থবছর এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল যথাক্রমে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ, ১২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

অলিম্পিকের কোম্পানি সেক্রেটারি মিন্টু কুমার দাশ বলেন, বিস্কুট পণ্যের স্থানীয় বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশই তাদের দখলে রয়েছে এবং এই হার আরও বাড়ানোর সুযোগ ও সম্ভাবনা আছে। এজন্যই তারা অব্যাহতভাবে বিনিয়োগ করে যাচ্ছেন।

অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের বছরে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬০১ টন বিস্কুট, মিষ্টান্ন ও 'ফ্লেভারড' স্যালাইন উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে কোম্পানিটি সক্ষমতার ৮০ শতাংশেরও বেশি ব্যবহার করেছে।

এদিকে কোম্পানিটি বিস্কুটের উচ্চ চাহিদা মেটাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। তাদের পরিকল্পনা মধ্যে আছে- প্রায় ৩ কোটি টাকায় ৮৬ শতক জমি কেনা।

এছাড়া কোম্পানিটি উৎপাদন ক্ষমতা ৮ হাজার ৩১৬ টন থেকে বাড়িয়ে ১৯ হাজার ০৮ মেট্রিক টন করতে চায়। এজন্য ২৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জাপান থেকে হাইস্পিড ইনস্ট্যান্ট নুডলস উৎপাদন লাইন আমদানি করতে যাচ্ছে।

৩ কোটি টাকায় বেকড স্ন্যাকস প্রসেসিং লাইন আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও কোম্পানিটির বার্ষিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Expatriates' remittance helps Bangladesh make turnaround: Yunus

It is the expatriates who help sustain the country, says the chief adviser

7h ago