বিদেশি গবেষণা অনুদানে কর ছাড়ের কথা ভাবছে সরকার

বিদেশি অনুদানের মাধ্যমে পাওয়া অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার কিছু বিধান দিতে পারে।
বিদেশি গবেষণা অনুদান
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভবন। ছবি: সংগৃহীত

সরকার স্থানীয় গবেষকদের কার্যক্রম জোরদার করতে এবং আরও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের জন্য বিদেশি অনুদানে কর ছাড় দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।

গবেষকরা বর্তমানে বিদেশি অনুদানের ওপর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কর দেন।

গতকাল বুধবার এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। শিগগিরই এ বিষয়ে সরকারি আদেশ জারি করা হবে।

তিনি আরও জানান, বিদেশি অনুদানের মাধ্যমে পাওয়া অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার কিছু বিধান দিতে পারে।

'এই উদ্যোগ অবশ্যই দেশে গবেষণা প্রসারে সহায়তা করবে' উল্লেখ করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটি গবেষকদের আরও বেশি কাজে উৎসাহিত করার পাশাপাশি ধীরে ধীরে জ্ঞানভিত্তিক দেশ গঠনে সহায়তা করবে।'

এই অর্থনীতিবিদের ভাষ্য, সিপিডির মতো অন্যান্য বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানও বিদেশি অনুদানের মাধ্যমে রিজার্ভে অবদান রাখে।

তিনি বলেন, 'পরিমাণ কম হলেও এর ভালো প্রভাব আছে।'

'অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের ওপর কর আরোপ করা উচিত নয়' বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং স্কলার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিদেশি তহবিলের ওপর কর মওকুফের উদ্যোগের সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত।'

সম্প্রতি বিদেশি তহবিল পাওয়া এই অধ্যাপক আরও বলেন, 'গবেষণা অনুদান ও ফেলোশিপ শিক্ষা সহায়তা হিসেবে বিবেচিত হয়। বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ আসার সময় এটি কর মুক্ত হওয়া উচিত।'

অনুদানের ওপর করকে গবেষকদের জন্য 'হতাশাজনক' আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, 'এ ধরনের বাধা দূর করলে একাডেমিক উৎকর্ষতা ও প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশ ত্বরান্বিত হবে।'

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও এসওএএস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের সাবেক ভিজিটিং স্কলার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম মনে করেন, 'এর ফলে শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা তাদের খ্যাতি, সৃজনশীলতা, প্রকাশনা, আবিষ্কার ও বৈশ্বিক সম্পৃক্ততা বাড়াতে অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে পারবেন।'

চামড়া শিল্পে কর সুবিধা

দেশের চামড়া শিল্পে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে উৎস কর এক শতাংশ থেকে কমিয়ে অর্ধেক করার পরিকল্পনা করছে সরকার।

বর্তমানে দেশে চামড়াসহ সব রপ্তানি পণ্যই এক শতাংশ হারে উৎস কর দেয়।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই এ বিষয়েও সরকারি আদেশ জারি করা হবে।

Comments