ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধে বিপদ দেখছে মাস্কের টেসলা

'ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়'—এমন পরিস্থিতিতে পড়ার আশঙ্কায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা ধনকুবের ইলন মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠান টেসলা।
প্রতিষ্ঠানটি সতর্ক করে বলেছে, ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে টেসলার মার্কিন রপ্তানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। কেননা, অন্যদেশগুলো মার্কিন পণ্যের ওপর প্রতিশোধমূলক পাল্টা শুল্ক চাপাতে পারে।
গতকাল শুক্রবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানায়—মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছে পাঠানো টেসলার এক সইহীন চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি বৈষম্যমুক্ত বাণিজ্যের পক্ষপাতী।
তবে আশঙ্কার বিষয়—যদি অন্যরা প্রতিশোধমূলক শুল্ক চাপায় তাহলে মার্কিন রপ্তানিকারকরা 'বৈষম্যমূলক' পরিস্থিতিতে পড়বে।
গত ১১ মার্চ ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে টেসলার প্রচারণা করেছিলেন। চিঠিতে সেই তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। মিত্র মাস্ককে ট্রাম্প সরকারি খরচ কমানোর দায়িত্ব দিয়েছেন।
এটি এখনো স্পষ্ট নয়, কে সেই সইহীন চিঠিটি লিখেছিলেন। অথবা মাস্ক বিষয়টি জানেন কিনা।
চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত টেসলার শেয়ারের দাম ৪০ শতাংশ কমেছে। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী মাস্ক। অনেকের অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা প্রতিষ্ঠানটির ক্ষতি করছে।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গত বছর টেসলার বিক্রি কম যাওয়া ও উৎপাদন লক্ষ্য পূরণ না করার প্রেক্ষাপটে শেয়ারের দাম কমে যাওয়া বেশি উদ্বেগের।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, টেসলা এর সরবরাহ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনছে। যাতে আরও বেশি সংখ্যক স্থানীয় পরিবেশক গাড়ি ও ব্যাটারি সরবরাহ করতে পারেন। বিদেশিদের ওপর নির্ভরতা যেন কমে যায়।
তবে এতে সতর্ক করে বলা হয়, 'স্থানীয়ভাবে গাড়ির সব যন্ত্রাংশ ও উপকরণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে সংগ্রহের চেষ্টা করা হলেও সবকিছু যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া যাবে না।'
মার্কিন সরকার চীনের সব পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছে। বেইজিংও গাড়িসহ বেশ কয়েকটি মার্কিন পণ্যে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পর চীন টেসলার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার।
গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেছিলেন, যারা টেসলার বিরোধিতা করছে তাদেরকে 'সন্ত্রাসী' হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তিনি একটি নতুন লাল টেসলার চালকের আসনে বলে বলেছিলেন, এমন একটি গাড়ি কেনার পরিকল্পনা আছে।
ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সির প্রধান ইলন মাস্ক সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর খরচ কমাতে অদক্ষ কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টেসলার শোরুমগুলোর সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে। তাদেরকে হুমকি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, বিক্ষোভকারীরা 'একটি বিখ্যাত মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করছে'। কেউ এই বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠানে হামলা চালালে তাকে 'জাহান্নামে যেতে হবে'।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপ করায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডাও প্রতিশোধমূলক শুল্কের হুমকি দিয়েছে।
Comments