গুজবে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ারের দাম
গুজবে ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডের শেয়ারের দাম ৯ কার্যদিবসের ব্যবধানে অস্বাভাবিকভাবে ৮৩ শতাংশ বেড়েছে। যদিও কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করা হয়েছে- তাদের কাছে এমন কোনো গোপন তথ্য নেই, যে কারণে এভাবে শেয়ারের দাম বাড়তে পারে।
এছাড়া, বেকারি পণ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানিটি এখনো ভালো মুনাফা অর্জন এবং লভ্যাংশ বিতরণে হিমশিম খাচ্ছে।
এরপরও গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪২ দশমিক ৯ টাকা, যা গত ২ জুলাই ছিল ২৩ দশমিক ৫ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্রকার বলেন, বেশ কয়েক মাস ধরে কোম্পানিটির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল এবং ২ জুলাইয়ের আগে কোনো বিনিয়োগকারী কেনার অর্ডার দেয়নি। কিন্তু, হঠাৎ করে কিছু জল্পনা পুরো পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে।
তিনি জানান, মূলত জাপানি প্রতিষ্ঠান মিনোরি বাংলাদেশ কোম্পানিটির শেয়ার কিনবে, এমন গুজবের কারণে অস্বাভিকভাবে শেয়ারের দাম বাড়ছে। একইভাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ধারণা, কিছু বড় বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির শেয়ার কিনছেন, তাই এর দাম বাড়বে।
এ বিষয়ে ডিএসই জানতে চাইলে ফু-ওয়াং ফুডস গত ৯ ও ১০ জুলাই ডিএসইকে জানিয়েছে, এই শেয়ারের দাম বাড়ার মতো তাদের কাছে এমন কোনো গোপন তথ্য নেই, যে কারণে এভাবে দাম বাড়তে পারে। তবুও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাতে কান দিচ্ছেন না।
তাইওয়ানের বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠার ৩ বছর পর ২০০০ সালে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত হয় ফু-ওয়াং ফুডস। কোম্পানিটি কেক, রুটি, বিস্কুট, টোস্ট, স্ন্যাকস ও নুডলস তৈরি এবং বাজারজাত করে। এর পরিশোধিত মূলধন ১১০ কোটি টাকা।
ফু-ওয়াং ফুডসের কোম্পানি সেক্রেটারি শরীফ আল মাহমুদ বলেন, 'কয়েক দিনের ব্যবধানে এত দাম বৃদ্ধি দেখে আমি বিস্মিত। আমরা জানি না কেন এত দ্রুত শেয়ারের দাম বাড়ছে। মিনোরি কোনো শেয়ার কিনবে কি না তা জানতে অনেকে ফোন করছেন। অথচ এটি পুরোনো খবর, তারা ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ শেয়ার কিনেছিল।'
'আমরা বুঝতে পারছি না, মানুষ কেন ইতোমধ্যে প্রকাশিত খবর দেখে সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা করছে না,' বলেন তিনি।
ফু-ওয়াং ফুডস ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল।
মাহমুদ জানান, তাদের কোম্পানি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে এবং পণ্য তালিকায় মুড়ি ও নতুন ধরণের বিস্কুট যোগ করেছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে শূন্য দশমিক ১৭ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল শূন্য দশমিক ১১ টাকা।
একজন মার্চেন্ট ব্যাংকার বলেন, যখন গুজব ছড়ায় কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান কোনো কোম্পানির শেয়ার কিনবে এবং শেয়ারের দাম বাড়বে, তখন বিনিয়োগকারীরা সেই গুজব বিশ্বাস করে শেয়ার কিনতে তাড়াহুড়ো করে।
তিনি বলেন, 'যারা গুজব ছড়ায় তারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে সিকিউরিটিজ ছেড়ে শেয়ার বিক্রির সুযোগ পায়। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
Comments