অর্থনৈতিক মন্দাতেও বিমা প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কেন বাড়ছে

স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

গত এক মাসে বেশিরভাগ বিমা প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম প্রায় প্রতিদিনই বেড়েছে। দেশে ও দেশের বাইরে চলমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে দেশের পুঁজিবাজারে এক ধরনের স্থবিরাবস্থা চলছে। এর মধ্যে বিমা প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের ইতিবাচক ধারা কিছুটা হলেও ব্যতিক্রমধর্মী।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৫৭ বিমা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৩টির দাম বেড়েছে, ৩টি ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে এবং ১টির দাম সামান্য কমেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা সব ধরনের যানবাহনের জন্য বিমা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দেওয়ার পর এ খাতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। কারণ এই উদ্যোগ তাদের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সড়কে যাতে কোনো ধরনের বিমাবিহীন যানবাহন চলাচল না করে, তা নিশ্চিত করার জন্য গত ১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দেন। সে কারণে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিবেচনার জন্য ইতোমধ্যে পাঠিয়েছে।

বিমা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব অনুযায়ী, বিমা করা না থাকলে গাড়ির মালিকরা ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার সম্মুখীন হতে পারেন।

এক সময় মোটরসাইকেল, গাড়ি, বাস, ট্রাকসহ সব যানবাহনের জন্য বিমা বাধ্যতামূলক ছিল। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৭ হাজার ৭১৩ জন নিহত হয়েছেন। তা সত্ত্বেও ২০১৮ সালে আইনটি বাতিল করা হয়।

বিমা বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে সরকারের এই নীতি বিমা সংস্থাগুলোর আয় বাড়াতে পারে।

তবে আবারও সব ধরনের যানবাহনের জন্য বিমা বাধ্যতামূলক করা হতে পারে—এমন খবর পাওয়ার পরেই জীবন বিমা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দাম বাড়ছে বলে জানান এই ব্রোকার।

'এমন গুজব উঠেছে যে, কিছু বড় প্রতিষ্ঠান বিমা খাতে অংশীদারিত্ব নিচ্ছে। তাই অনেকেই এসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন', যোগ করেন তিনি। 

ওই গুজব শুনেই অনেকে বিমা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কারণ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূলত ফ্লোর প্রাইসের কারণে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দামে খুব বেশি ওঠা-নামা নেই।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বাজারে সূচকের পতন ঠেকাতে গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়। ডিসেম্বরে কিছু প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি প্রত্যাহার করা হলেও মার্চে আবারও সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে এই বিধি আরোপ করা হয়।

একজন বিনিয়োগকারী বলেন, 'আমাদের বেশিরভাগ শেয়ারের দাম কোনো যুক্তি ছাড়াই বৃদ্ধি পায় এবং বড় বিনিয়োগকারীরা যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কেনে, আমরাও সবসময় সেগুলোর খোঁজে থাকি।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, যানবাহনের বিমা বাধ্যতামূলক করার খবরটি বিনিয়োগকারীদের উত্সাহ দিয়েছে, যা গুরুত্বপূর্ণ। যারা কারসাজি করে, তারা বিনিয়োগকারীদের এই ইতিবাচক মনোভাবের সুযোগ নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সংক্ষেপিত। মূল প্রতিবেদন পড়তে ক্লিক করুন Why insurance stocks surging in a dull market
অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English
NSC shop rent scam in Dhaka stadiums

Shop rent Tk 3 lakh, but govt gets just Tk 22,000

A probe has found massive irregularities in the rental of shops at nine markets of the National Sports Council (NSC), including a case where the government receives as little as Tk 22,000 in monthly rent while as much as Tk 3 lakh is being collected from the tenant. 

18h ago