বার বার আমি মঞ্চেই ফিরতে চেয়েছি, ফিরেছি: আসাদুজ্জামান নূর

‘শিল্পীর ক্ষুধা কখনো মেটে না।’
Asaduzzaman Noor
আসাদুজ্জামান নূর। ছবি: স্টার

কোথাও কেউ নেই নাটকের বাকের ভাই, অয়োময়ের মীর্জা কিংবা মাটির পিঞ্জিরার নান্দাইলের ইউনুস-খ্যাত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর। বাংলাদেশের বিখ্যাত অভিনেতা তিনি। মঞ্চ, টিভি নাটক, চলচ্চিত্র, বেতার নাটক, ওয়েব ফিল্মে নন্দিত হয়েছেন।

সম্প্রতি নতুন একটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণী অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের সঙ্গে সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছেন তার অভিনয় ও ব্যক্তিগত জীবনের নানা দিক নিয়ে।

দ্য ডেইলি স্টার: একজন শিল্পীর অভিনয়ের ক্ষুধা কি মেটে?

আসাদুজ্জামান নূর: না, শিল্পীর ক্ষুধা কখনো মেটে না। বার বার ওই জায়গায় ফিরতে ইচ্ছে করে। শিল্পীর ক্ষুধা থেকেই যায়। থাকাটাই স্বাভাবিক। একটি নাটকে বা সিনেমায় যত ভালো অভিনয় করা হোক না কেন, পরের কাজটির জন্য আকাঙ্ক্ষা আরও বেড়ে যায়। ফলে শিল্পীর ক্ষুধা কখনো মেটে না।

asaduzzaman noor
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। ছবি: স্টার

ডেইলি স্টার: বেতার নাটক, চলচ্চিত্র, টিভি নাটক ও মঞ্চে সুদীর্ঘকাল ধরে অভিনয় করেছেন। সবচেয়ে প্রিয় জায়গা কোনটি?

আসাদুজ্জামান নূর: অবশ্যই মঞ্চ। মঞ্চে অভিনয় করার আলাদা একটা আনন্দ আছে। সরাসরি দর্শকদের ভালোবাসা পাওয়া যায়। দর্শকরা কতটুকু গ্রহণ করলেন, তা সরাসরি দেখা সম্ভব। বার বার আমি মঞ্চেই ফিরতে চেয়েছি। রিমান্ড নামে নতুন একটি নাটক করছি মঞ্চে। আমার চরিত্রটি একজন লেখকের। রিমান্ড নাটকটি করে অনেক ভালো লাগছে। নাটকটি আমার জন্য খুব শ্রমসাধ্য ব্যাপার ছিল। তারপরও করেছি। একজন পারফরমার হিসেবে এই নাটকটি করে আমি তৃপ্ত।

একজন অভিনেতা হিসেবে মঞ্চে ফেরার ইচ্ছেটা আমার ভেতরে প্রবল। ফিরেছিও। সামনে আরও কাজ করার ইচ্ছে আছে মঞ্চে। যখনই সুযোগ পেয়েছি, তখনই মঞ্চে বা টেলিভিশনে অভিনয় করার চেষ্টা করেছি।

ডেইলি স্টার: টেলিভিশন নাটকে জনপ্রিয়তার চূড়ায় পৌঁছেছিলেন আপনি। এই বয়সে এসে সেভাবে মনের মতো চরিত্র কি পাচ্ছেন?

আসাদুজ্জামান নূর: না। মঞ্চে আমি ওই জায়গাটা পাই। মঞ্চে পছন্দমতো চরিত্র পাই। কিন্তু টেলিভিশন নাটকে বয়স অনুযায়ী সেরকম চরিত্র এখানে কম হয়।

ডেইলি স্টার: আপনি একজন সফল অভিনেতা, সফল রাজনীতিবিদ। তারপরও কোনো আফসোস কিংবা অপূর্ণতা আছে কি?

আসাদুজ্জামান নূর: না, কোনো আফসোস নেই। এসব নিয়ে ভাবি না। কাজ নিয়েই ভাবি। কর্মটাই সব। সারাজীবন কাজের মধ্যে থাকতে চেয়েছি। তাই হয়েছে। আফসোস, অপূর্ণতা—এসব নিয়ে কখনো ভাবিনি। মানুষ বেঁচে থাকে কর্মের মধ্যে দিয়ে।

আসাদুজ্জামান নূর। ছবি: শেখ মেহেদী মোর্শেদ/স্টার

ডেইলি স্টার: অভিনয়, রাজনীতি, ব্যবসা, সংগঠন—সব মিলিয়ে আপনার জীবনটা তো নানাদিকে ছড়ানো...

আসাদুজ্জামান নূর: সম্প্রতি আমি একটা লেখা লিখেছি। ওটা এখনো ছাপা হয়নি। ওখানে আমি লিখেছি—জীবন তো নানাক্ষেত্রে  ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেল। একদিকে ব্যবসা, একদিকে সাংস্কৃতিক অঙ্গন, আরেকদিকে রাজনীতি। নানামুখী ব্যস্ততা। তারপরও সময় করে প্রতিটি কাজ করার চেষ্টাটা ছিল। তবে, আমার মধ্যে থিয়েটারে ফেরার ইচ্ছেটা প্রবল। নানা কাজের ভিড়েও। জীবন নানা ক্ষেত্রে ছড়ানোর পরও মঞ্চের প্রতি টানটা অনেক বেশি।

ডেইলি স্টার: আপনার নিজের এলাকা নীলফামারীর সঙ্গে যোগাযোগ কীভাবে করেন?

আসাদুজ্জামান নূর: প্রতি মাসে বেশ কবার নিজের এলাকায় আসা-যাওয়া করি। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। আমার এলাকার মানুষকে আমি প্রচণ্ড ভালোবাসি। তারাও আমাকে খুব ভালোবাসেন। তাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করি। এলাকার প্রতি টান আমার সবসময়ই আছে।

আসাদুজ্জামান নূর। স্টার ফাইল ফটো

ডেইলি স্টার: আপনার পূর্বপুরুষের আদি বাড়ি কোথায়?

আসাদুজ্জামান নূর: টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুরে। বেশ কয়েকবছর আগে একবার গিয়েছিলাম। আমার চাচাত ভাইয়েরা আছেন। গিয়ে খুব ভালো লেগেছিল।

ডেইলি স্টার: সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধের একটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন?

আসাদুজ্জামান নূর: হ্যাঁ, মুক্তিযুদ্ধের একটি সিনেমা করেছি। হাসান আজিজুল হকের গল্প অবলম্বনে। সিনেমাটির নাম 'একাত্তর করতলে ছিন্নমাথা'। মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা বলেই করেছি। চেষ্টা করি মাঝে মাঝে সিনেমায় অভিনয় করার। চাঁদের অমাবস্যা নামে আরও একটি সিনেমা করেছি।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago