তারিনের জীবনের নতুন অধ্যায়

অনেক সাড়া জাগানো নাটকের এই অভিনেত্রী প্রথমবারের মতো ভারতীয় বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
তারিন
তারিন। ছবি: শেখ মেহেদী মোর্শেদ

তারিন বাংলাদেশের দর্শকপ্রিয় তারকা অভিনেত্রী। দীর্ঘদিন ধরে টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করছেন। তারকাখ্যাতি পেয়েছেন বহু আগে। একজন নৃত্যশিল্পীও তিনি। গত বছর '১৯৭১ সেইসব দিন' সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন। অনেক সাড়া জাগানো নাটকের এই অভিনেত্রী প্রথমবারের মতো ভারতীয় বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন।

আজ ২৬ এপ্রিল কলকাতায় তারিন অভিনীত প্রথম সিনেমা 'এটা আমাদের গল্প' মুক্তি পেয়েছে। কলকাতা থেকে তিনি কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

প্রথমবার ভারতীয় বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন। কীভাবে যুক্ত হলেন এই সিনেমায়?

আমার অভিনীত প্রথম ভারতীয় বাংলা সিনেমা `এটা আমাদের গল্প' । পরিচালনা করেছেন মানসী সিনহা। তিনি একজন নামকরা অভিনেত্রীও। তিনি বেশ আগে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। সেখানে আমাদের আলাপ হয়েছিল। তারপর আমার নম্বর নিয়ে যান, কলকাতায় ফিরে যোগাযোগ করেন। তিনি আমাকে তার পরিচালিত প্রথম সিনেমায় অভিনয় করার প্রস্তাব দেন, গল্পটা বলেন। গল্প ভালো লেগে যায়। এভাবেই সিনেমাটি করি।

তারিন
তারিন। ছবি: স্টার

আজ সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে। সময়টা কাটছে কেমন?

ভালো সময় কাটছে। কয়েকদিন হলো কলকাতা এসেছি। পরশু সিনেমার প্রমোশনে আমি ও মানসী সিনহা দিদি একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম দিদি নম্বর ওয়ানের স্টুডিওতে। সেখানে আমি ও পরিচালক অতিথি হিসেবে ছিলাম। এটা আমার জন্য এখানে প্রথম। এখানে কিছু প্রমোশনের কাজ চলছে। সময়টা ভালো কাটছে। আজ হলে যাব এবং প্রমোশনে অংশ নেব।

কবে শুটিং করেছিলেন?

বেশ আগে, কোভিডের আগে। আশার কথা হচ্ছে, আজ কলকাতাসহ বিভিন্ন জায়গায় ৫০টি হলে মুক্তি পাচ্ছে এটি। আস্তে আস্তে হল বাড়বে।

আপনার অভিনীত প্রথম ভারতীয় বাংলা সিনেমার গল্পটা কেমন?

সত্যি কথা বলতে দুজন বুড়োবুড়ির গল্প, তাদের ভালোবাসার গল্প। একটা সময় বয়স্ক মানুষেরা একা হয়ে যান। তাদের সন্তানরা দূরে সরে যায় কিংবা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাদেরই গল্প। আসলে ভালোবাসার জন্য কোনো বয়স লাগে না, এই সিনেমায় তা দেখানে হয়েছে। পরিবারের কথা উঠে এসেছে। দেখানো হয়েছে, যে কোনো বয়সে মানুষ প্রেমে পড়তে পারে। একজন বয়স্ক মানুষ নিঃসঙ্গ থাকার চেয়ে যদি ভালোবাসার মানুষ পায় তাহলে সময়টাও ভালো কাটে। এভাবেই গল্প এগোবে। মূল গল্পটা চমৎকার।

পরিচালক মানসী সিনহা সম্পর্কে কিছু বলুন।

মানসী সিনহা নামকরা অভিনেত্রী। একজন ভালো মানুষ তিনি। তার মতো গুণী মানুষের প্রথম সিনেমায় অভিনয় করতে পেরে ভালো লাগছে। দারুণ একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে মানসী দিদির সঙ্গে। তার ভালোাসাটাও অনেক বড় আমার জন্য। এই সিনেমায়  সুন্দর একটা ম্যাসেজ আছে।

ওখানকার শিল্পীদের কাছ থেকে কতটা ভালোবাসা পেয়েছেন?

ভীষণ রকমের ভালোবাসা পেয়েছি। সবাই আমাকে অনেক আপন করে নিয়েছিলেন। এটা ভুলবার নয়। একটি উদাহরণ দিই। খরাজ মুখার্জি অনেক বড় অভিনেতা ভারতের, তার গল্প বলি। তিনিও অভিনয় করেছেন একই সিনেমায়। একদিন খরাজ মুখার্জি বললেন, তুমি আমাদের অতিথি, বাংলাদেশ থেকে এসেছ। কী খেতে পছন্দ করো বলো। আমি দাদাকে বলেছি, আমি সবজি পছন্দ করি, ভর্তা পছন্দ করি। পরের দিন শুটিং করছি। খরাজ দা নিজে সবজি রান্না করে নিয়ে আসেন আমার জন্য। আমি অবাক তার ভালোবাসা ও আতিথেয়তায়।

আরেকদিন শ্বাশতদার সঙ্গে শুটিং ছিল। তিনি হঠাৎ বললেন, তারিন তোমার কি আগামী দিন শুটিং আছে? বললাম, না। তিনি বললেন, তুমি কাল চলে এস। শুটিংয়ে লাঞ্চ করবে। আমি না করার পরও যেতেই হয়েছিল তাদের আন্তরিকার জন্য। এইসব কথা মনে থাকবে সবসময়। কলকাতায় সিনেমা করতে গিয়ে যে ভালোবাসা ও আন্তরিকতা পেয়েছি তা ভুলবার নয়।

দর্শকরা আপনাকে কী রকম চরিত্রে দেখবেন?

দর্শকরা দেখবেন, আমি একজন বাংলাদেশের মেয়ে, যার কলকাতায় বিয়ে হয়। যে সংসারে বিয়ে হয় সেই সংসারের গল্প নিয়েই মূল কাহিনী। এই সিনেমাটা পরিবার নিয়ে দেখার মতো। সুন্দর গল্প, সুন্দর টিম। সবার ভালো লাগবে। এখানে অভিনয় করার সুযোগ ছিল ।

শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

এখানে শতভাগ পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ হয়। যদি সকাল ৭টায় কল করা হয়, তাহলে ৭টাতেই যেতে হবে। শুটিং করতে এসে দেখেছি সবাই টাইম খুব মেইনটেইন করেন। এখানে সময়ের মূল্য দেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Govt cancels deal with Summit Group for second FSRU

Summit terms termination of the deal ‘unjustified’, says will appeal for review

1h ago