কেমন আছেন সোনালি দিনের নায়িকা সুচন্দা

কোহিনূর আক্তার সুচন্দা।। ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/স্টার

ষাট ও সত্তর দশকের সাড়া জাগানো নায়িকা কোহিনূর আক্তার সুচন্দা। মূলত সুচন্দা নামেই তিনি পরিচিত। 'কাগজের নৌকা' দিয়ে সিনেমায় তার অভিষেক।

জীবন থেকে নেওয়া, অশ্রু দিয়ে লেখা, যে আগুনে পুড়ি, কাঁচের স্বর্গ, চাওয়া পাওয়া, নয়নতারা, সুয়োরানী দুয়োরানী, বেহুলা, আনোয়ারা, যোগ বিয়োগ, মনের মতো বউ, নতুন নামে ডাকো, আয়না ও অবশিষ্ট, কথা দিলাম, কলমিলতা, সকাল সন্ধ্যা, ফুলের মত বউসহ আরও অনেক সাড়া জাগানো সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। জহির রায়হানের 'হাজার বছর ধরে' উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সিনেমা নির্মাণ করেছেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্রে আজীবন সম্মাননাও পেয়েছেন।

বর্তমানে সিনেমা থেকে অনেক দূরে সোনালি দিনের এই নায়িকা। কী করছেন কিংবা কীভাবে কাটছে সময়—এসব জানতে সম্প্রতি সুচন্দার সঙ্গে কথা বলেছে দ্য ডেইলি স্টার।

সুচন্দা বলেন, আমি ভালো আছি। সবার দোয়ায় ও মানুষের ভালোবাসায় ভালো আছি। এই বয়সে যতটুকু থাকা যায় ততটুকু আছি।

ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/স্টার

'ঘরে বসে সময় কাটে। খুব সকালে ঘুম ভাঙে। সৃষ্টিকর্তার নাম নিয়ে সকাল শুরু করি। প্রতিদিন সকালে দুই ঘণ্টা গাছের পরিচর্যা করি। কখনো বেশি সময়ও করি। গাছে পানি দেওয়া, গাছের সবকিছু পরিষ্কার করা, যতরকম যত্ন আছে গাছের সব করি।'

কী ধরনের গাছ আছে আপনার বাসায়, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফুলের গাছ আছে। কিছু ফলের গাছ আছে। কয়েকটি বারান্দা আছে বাসায়। বারান্দায় গাছগুলো আছে। গাছগুলোর জন্য অনেক মায়া কাজ করে এখন।

দিনের বাকিটা সময় কীভাবে কাটে? প্রশ্নের উত্তরে সুচন্দা বলেন, এরপর শুরু হয় আমার ঘরের কাজ। ঘরের মধ্যে কতরকম কাজ থাকে। সেগুলো করি। আমি তো একা মানুষ। সব কাজ একা করতে হয়।

ছবি: সংগৃহীত

বাইরে যান কি না, জানতে চাইলে ষাটের দশকের নন্দিত এই নায়িকা বলেন, পারিবারিক কাজ থাকলে যাই। খুব কম। কখনো কখনো ডাক্তারের কাছে যাই। পারিবারিক কোনো নিমন্ত্রণ থাকলে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করি।

ডায়েরি লেখেন কি? প্রশ্নের জবাবে সুচন্দা বলেন, ডায়েরি লিখি না। তবে, নোট করে রাখি। এটা আমার সারাজীবনের অভ্যাস। আমি নোট করি সারাদিন কী কী করব কিংবা পরের দিন কী কী কাজ করব। এই নোট করার অভ্যাস অনেক দিনের।

'আমার খুব আনন্দের কাজ হচ্ছে নাতি-নাতনিদের সময় দেওয়া, ওদের সঙ্গে দেখা করা, গল্প করা। ওরা কী চায়, যা বাবা-মাকে বলতে পারে না, আমাকে নির্দ্বিধায় বলতে পারে। সেগুলো পূরণ করার চেষ্টা করি', বলেন তিনি।

ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/স্টার

'জীবন থেকে নেয়া' সিনেমা থেকে শুরু করে অনেক সাড়া জাগানো সিনেমা করেছেন আপনি। সেসব কাজগুলো এখন দেখেন, জানতে চাইলে সুচন্দা বলেন, ইউটিউবে কখনো কখনো গান দেখি। একটি-দুটি দৃশ্য দেখি। পুরো সিনেমা দেখার সময় পাই না। আর টেলিভিশন দেখা হয় না বহুবছর। কিন্তু ছেলে কিংবা মেয়ের বাসায় গেলে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলে প্রকৃতি দেখি। তাও ৩০ মিনিট বড়জোর।

সুচন্দা-ববিতা-চম্পা—তিন বোনের দারুণ একটা বন্ধনের কথা সবাই জানেন। এই বন্ধন গভীর হওয়ার পেছনে কার অবদান বেশি? সুচন্দা বলেন, আমার। পারিবারিক বন্ধনটা ধরে রাখার জন্য আমি চেষ্টা করেছি বেশি। এই বন্ধন অটুট আছে। এর সমস্ত কৃতিত্ব আমার। আমি সবসময় চাই বন্ধনটা থাকুক। কার কী হলো, কে কেমন আছে, একটা গেটটুগেদার—সবকিছু আমি চেয়েছি।

'আমরা পারিবারিকভাবে দেশের বাইরে ঘুরতে গিয়েছি অনেক। এখানেও বন্ধন কাজ করেছে। পুরো ক্রেডিট আমার। আমি চাই পারিবারিক বন্ধনটা সবার মাঝে থাকুক', বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

US tariff threatens booming synthetic shoe exports

The country’s growing non-leather footwear industry now faces a major setback as a steep new tariff from the United States threatens its growth

13h ago