মানুষের ভালোবাসা বড় প্রাপ্তি: ৭৮তম জন্মদিনে বললেন নায়ক উজ্জ্বল

নায়ক উজ্জ্বল। ছবি: শেখ মেহেদী মোর্শেদ/স্টার

পুরো নাম আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল হলেও 'নায়ক উজ্জ্বল' নামেই তিনি সবার কাছে পরিচিত। মেগাস্টার বলা হতো তাকে। ১৯৭০ সালে তার অভিনীত প্রথম সিনেমা 'বিনিময়' মুক্তি পায়। নায়িকা ছিলেন কবরী। তারপর ক্যারিয়ারে কেবলই সাফল্য ছুঁয়ে গেছে। শতাধিক সিনেমা করেছেন। নায়ক, প্রযোজক ও পরিচালক—তিন মাধ্যমেই সফলতা পেয়েছেন তিনি।

ক্যারিয়ারে সাড়া জাগানো অনেক সিনেমা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সিনেমা হচ্ছে—অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী, নসিব, নালিশ, উসিলা, লালন ফকির, কাঁচের স্বর্গ, সমাধান, স্বীকৃতি, দুটি মন দুটি আশা, পায়ে চলার পথ, শনিবারের চিঠি, গড়মিল, সমাধি, অনুভব, রূপালি সৈকতে, ফকির মজনু শাহ, জনতা এক্সপ্রেস, মহেশ খালির বাঁকে, নিজেরে হারায়ে খুঁজি, বীরাঙ্গনা সখিনা, অপবাদ এবং বাংলার মুখ।

আজ ২৮ এপ্রিল তার ৭৮তম জন্মদিন।

বিশেষ দিনে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন নায়ক উজ্জ্বল।

তিনি বলেন, গত রাত থেকেই মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছি। সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। আজ দিনভর অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে শুভেচ্ছা পেয়েছি। একটি টিভি চ্যানেলে অতিথি হিসেবে গিয়েছি। পরিবারের সদস্যরা রাতেই কেক কেটেছেন। আজও কেক কাটা হয়েছে। রাতেও কাছের মানুষেরা বাসায় আসছেন। তাদের সঙ্গে সময় কাটবে।

নায়িকা কবরীর সঙ্গে নায়ক উজ্জ্বল। ছবি: সংগৃহীত

৭৮তম জন্মদিনটি কতটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে আপনার জীবনে, চানতে চাইলে মেগাস্টার উজ্জ্বল বলেন, এবারের জন্মদিন বেশ স্মরণীয়, আমি অভিভূত। সত্যিই আমি মুগ্ধ। ভুলবার নয়। কাছের মানুষ, দূরে মানুষ, সাংবাদিক—সবার কাছে কৃতজ্ঞ। পরিবারের সবার প্রতিও কৃতজ্ঞ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরাও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

'এবারের জন্মদিন খুব মুক্ত পরিবেশে উন্মুক্তভাবে করতে পেরেছি। অনেকদিন পর এইরকম একটি জন্মদিন উদযাপন করছি।'

জন্মদিনকে কেন্দ্র করে টিভি চ্যানেলে আপনার অভিনীত সিনেমা ও গান দেখানো হচ্ছে। কেমন লাগে? তিনি বলেন, কোনো সিনেমা যদি সফল হয়, দর্শকপ্রিয় হয়, তাহলে সিনেমাগুলো বছরের পর টিকে যায়। কোনো সিনেমা যদি একবার দর্শকদের হৃদয়ে গেঁথে যায়, তাহলে তা দেখবেই। সেটা যত পুরোনোই হোক।

উজ্জ্বল বলেন, মানুষ তার কর্ম দিয়ে অমরত্ব লাভ করে। কর্মই বাঁচিয়ে রাখে। আমাদের সোনালি দিনের সিনেমাগুলো দর্শকদের হৃদয়ে থেকে যাবে। মুছে যাবে না। এভাবেই আমরা শিল্পীরা মৃত্যুর পরও ভালোবাসা পাই।

দীর্ঘ চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের বড় প্রাপ্তি কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানুষের ভালোবাসা বড় প্রাপ্তি। পরিবার বলুন, কাছের ও দূরের মানুষ বলুন, দর্শক বলুন, সবার ভালোবাসা জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে। জীবনের অর্জনই তো ভালোবাসা। সম্মান ও ভালোবাসা বড় অর্জন।

ছবি: শেখ মেহেদী মোর্শেদ/স্টার

চলচ্চিত্র নায়ক হিসেবে নায়ক উজ্জ্বল নায়িকা হিসেবে পেয়েছেন শাবানা, কবরী, ববিতা, রোজিনা, সুজাতা, সুচরিতাসহ অনেককে। সেই বিষয়ে তিনি বলেন, ১৯৭০ সালে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। সেই সময় প্রয়াত সুভাষ দত্ত আমাকে 'বিনিময়' সিনেমায় নায়ক বানান। নায়িকা ছিলেন কবরী। তারপর শাবানা ও ববিতাসহ অনেক নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেছি। সবার সঙ্গেই সুন্দর সম্পর্ক ছিল।

চলচ্চিত্রের নায়কদের মধ্যে প্রিয় বন্ধু কে, যার সঙ্গে এখনো সুসম্পর্ক আছে? জানতে চাইলে বলেন, সিনেমায় অনেক বন্ধু ছিলেন। অনেকেই আজ বেঁচে নেই। নায়ক আলমগীর আমার খুব ভালো বন্ধু। তার সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক এখনো আছে। মাঝেমধ্যে আমরা আড্ডা দিই। কখনো আমার বাসায়, কখনো তার অফিসে। প্রায় প্রতিদিন আমরা ফোনে কথা বলি। এই আন্তরিকতা ভালো লাগে।

ঢাকাই সিনেমার হারানো গৌরব কি ফিরে আসবে বলে মনে করেন, জানতে চাইলে উজ্জ্বল বলেন, আমি আশাবাদী মানুষ। আমাদের সিনেমা হল যেমন বেশি দরকার, ভালো সিনেমার সংখ্যাটাও বাড়ানো দরকার। তাহলেই সগৌরবে সিনেমার হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসবে।

Comments

The Daily Star  | English
BNP protests for Ishraque Hossain in Dhaka

Ishraque supporters protest in different parts of Dhaka

Protesters assembled at Matsya Bhaban, Kakrail and Jatiya Press Club, demanding that Ishraque be immediately sworn in as the mayor of the DSCC

1h ago