‘জাফর ইকবালের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল ভালোবাসাও ছিল’

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী ববিতা সত্যজিৎ রায়ের 'অশনি সংকেত' সিনেমায় অভিনয় করে দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হন।
দেশে-বিদেশে অনেক সম্মানিত হয়েছেন ঢাকাই সিনেমার স্বর্ণযুগের এই চিত্রনায়িকা। কালজয়ী অনেক সিনেমায় অভিনয় করে পেয়েছেন মানুষের ভালোবাসা।
আগামীকাল ৩০ জুলাই নন্দিত এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। বর্তমানে তিনি আছেন কানাডায় একমাত্র ছেলে অনিকের কাছে।
জন্মদিনের আয়োজনসহ নানা বিষয়ে টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন ববিতা। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেই ববিতা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কানাডায় সময় কাটছে কীভাবে?
ববিতা: এখানে ছেলের বাসায় আছি। আমার একমাত্র সন্তান অনিকের বাসা কানাডার কিচেনাতে। সেখানে তার নিজের সুন্দর বাড়িটিতে আছি, ছেলেকে পছন্দের খাবার রান্না করে দিই। সবরকম বাঙালি খাবার রান্না করি।

আবার, ছেলের বাড়ির এখানে অনেক জায়গা আছে। নার্সারি থেকে গাছ কিনে আনি এবং রোপণ করি। দেশেও আমি বাগান করি। আমার ছাদ বাগান আছে। কানাডায় এসেও বাগান করছি। ভালো লাগে বাগান করতে। কখনো ঘুরতে বের হই। এভাবেই সময় কেটে যাচ্ছে।
ছেলে এখনো নিয়ে করেনি। ছেলের বিয়ে নিয়ে আমিও চাপ দেই না—তার স্বাধীনতা আছে। যখন সময় হবে যাকে পছন্দ হবে বলবে আমরা বিয়ের আয়োজন করব।
সত্যজিৎ রায়ের 'অশনি সংকেত' সিনেমায় অভিনয়ের পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ সাড়া পড়ে। এ বিষয়টাকে কীভাবে দেখেন।
ববিতা: এ কথা সত্য যে, সত্যজিৎ রায়ের 'অশনি সংকেত' করার পর অনেক সম্মান পেয়েছি। দেশে-বিদেশে অনেক সম্মান পেয়েছি। আজও মানুষ ওই সিনেমার কথা বলেন, প্রশংসাও করেন। তখন যেখানেই যেতাম বলা হতো 'ববিতা ফ্রম বাংলাদেশ'। এটি আমার জন্য বড় পাওয়া ছিল সে সময়। কেননা, সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা করে আমি দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পেরেছিলাম।
আপনি অনেক দিন সিনেমা থেকে দূরে আছেন। কেন?
ববিতা: সিনেমা করতে চাই, কিন্তু আমাদের মতো বয়সীদের নিয়ে চরিত্র অন্যভাবে ভাবতে হবে। সেরকম চরিত্র পেলেই কাজ করব। কয়েকদিন আগে একটা ফোন এসেছিল সিনেমার জন্য। কিন্তু, গল্প ও চরিত্র মনের মতো হয়নি।
ঢাকাই সিনেমার ইতিহাস লিখতে গেলে ববিতা নামটি তো লিখতে হবে, ববিতা নামটি আসবে। কিছু কাজ তো আমি করেছি, মানুষের বিপুল ভালোবাসা অর্জন করেছি। সেজন্য, সিনেমায় ফিরতে হলে তেমন কাজই দরকার।
আগামীকাল আপনার জন্মদিন, বিশেষ দিনটি নিয়ে পরিকল্পনা কী?
ববিতা: জন্মদিনে ছেলে আমাকে সারপ্রাইজ দেবে। বলেছে, এখনই জানাবে না, সারপ্রাইজ আছে। অপেক্ষা করছি তার জন্য। এখন তো বয়স হয়ে গেছে। তাছাড়া, ঘটা করে এখন আর জন্মদিন উদযাপন করি না। আগে একটা সময় করা হতো।
অনেক নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেছেন। নায়ক জাফর ইকবালের সঙ্গেও করেছেন, জাফর ইকবালের সঙ্গে বন্ধুত্ব কেমন ছিল?
ববিতা: দীর্ঘদিন কাজ করতে করতে অনেকের সঙ্গেই বন্ধুত্ব হয়েছিল। নায়ক জাফর ইকবাল বেশ হ্যান্ডসাম ছিলেন। নায়ক-গায়ক দুটোই ছিলেন। তার সঙ্গে বেশকিছু সিনেমা করেছি। আমাদের জুটিটাও আলোচিত হতো, দর্শকরাও পছন্দ করতেন।
বন্ধু হিসেবে জাফর ইকবাল চমৎকার ছিলেন। আমি বলব, একজন ভালো বন্ধু ছিলেন নায়ক জাফর ইকবাল। তবে, তার সঙ্গে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা—দুটোই ছিল।
দর্শকদের কাছে আপনার চাওয়া কী?
ববিতা: সারাজীবন মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। এত ভালোবাসা পেয়েছি যা কোনোদিনও ভুলবার নয়। সবসময় মনে থাকবে। ভক্তরা আমাকে খুবই ভালোবাসেন, সম্মান করেন। আমিও তাদের সম্মান করি। সবার আশীর্বাদ চাই, আর কিছু না।
Comments