শিল্পকলা একাডেমি থেকে জামিল আহমেদের পদত্যাগের ঘোষণা

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ জামিল আহমেদ।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পদত্যাগের কথা সামনে আনেন তিনি।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর শিল্পকলার মহাপরিচালকের দায়িত্ব নেন অধ্যাপক জামিল আহমেদ। এর সাড়ে পাঁচ মাস পর পদ ছাড়লেন তিনি।
আজ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগ আয়োজিত 'মুনীর চৌধুরী প্রথম জাতীয় নাট্যোৎসব'–এর সমাপনী অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেনের হাতে তিনি পদত্যাগপত্র তুলে দেন।
জামিল আহমেদ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখার কথা ছিল। হঠাৎ দর্শক শ্রোতাদের সামনেই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এখানে কাজ করা আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়। তাই আপনাদের সবার সামনে শিল্পকলা একাডেমির সচিবের (মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন) কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছি, আমন্ত্রিত অতিথি ও দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশে বলেন তিনি।
এই নাট্যব্যক্তিত্ব তার শিকড়—থিয়েটারে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেন,
যদি আমরা বারবার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানোর পরও একটি সহযোগিতামূলক এবং শান্তিপূর্ণ কাজের পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে না পারি আমলাতান্ত্রিক বাধার কারণে, তাহলে আমি এখানে কীভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারি, তা দেখতে পাচ্ছি না। আমি অনেক ভেবেচিন্তে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বলা হয়েছিল যে, আমরা "আদিবাসী" শব্দটি উচ্চারণও করতে পারব না। আমি আজ পদত্যাগ করছি, আমার আন্তরিক ইচ্ছা হলো আদিবাসীরা তাদের ন্যায্য স্বীকৃতি পাবে, তাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের নিপীড়ন বন্ধ হবে এবং তারা এই দেশের অন্যান্য নাগরিকের মতো একই রকম অধিকার ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে।
আমি একটি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, আমাদের শহীদরা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, জাতি সেই আদর্শকে সমুন্নত রাখবে। আমরা সাম্প্রতিক জুলাই আন্দোলনের চেতনাকে হারিয়ে ফেলছি, এবং আমি আন্তরিকভাবে প্রত্যাশা করি শিল্পকলা একাডেমি ভবিষ্যতে সেই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে কাজ করবে, যোগ করেন তিনি।
একই মঞ্চে ওয়ারেছ হোসেন বলেন, এই পদত্যাগপত্র গ্রহণের এখতিয়ার তার নেই; এটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিবের এখতিয়ার।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। পদত্যাগপত্র হাতে পাওয়ার পর তিনি এ ব্যাপারে মন্তব্য করবেন।
Comments