এফডিসি এখন শৃঙ্খলায় চলছে: নিপুণ
ঢাকাই সিনেমার দর্শকপ্রিয় মুখ নিপুণ। ২ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রীর নতুন সিনেমা মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। এ ছাড়া একটি সিনেমার শুটিংও শেষ করেছেন। নিপুণ এফডিসির বর্তমান অবস্থা, শিল্পী সমিতি, সিনেমায় নতুন হাওয়াসহ নানা বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
১৬ বছরের ক্যারিয়ার আপনার, শুরুতে কোনো স্ট্রাগল করতে হয়েছিল?
অবশ্যই স্ট্রাগল করতে হয়েছিল। কারণ এই জগতে আমার পরিচিত কেউ ছিল না। আমার জন্য নতুন জায়গা ছিল। সেজন্য কিছুটা স্ট্রাগল তো করতেই হয়েছিল। যেহেতু দেশের বাইরে পড়ালেখা করেছিলাম সেটা আমার এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে। বিষয়টিকে চলচ্চিত্রের সবাই খুব ইতিবাচক হিসেবে দেখেছেন।
১৬ বছরে সিনেমায় আপনার অর্জন?
প্রাপ্তিই বেশি। পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করলে একটি গণ্ডির মধ্যে থাকতাম। অল্প কিছু মানুষ আমাকে চিনতেন। কিন্তু, ঢাকাই সিনেমায় অভিনয় করার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং বাংলা ভাষার মানুষরা আমাকে চেনেন। অনেক মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি চলচ্চিত্রের শিল্পী হিসেবে। এসবই তো জীবনের বড় প্রাপ্তি।
একটি কথা প্রায়ই শোনা যায়- ফিল্মে পলিটিকস হয়...
দেখুন, বিশ্বের যে কোনো দেশের শোবিজে পলিটিকস আছে। সবাই চাইবে একটা ভালো জায়গায় যেতে। কিন্তু, আমি বিষয়টিকে ওভাবে দেখি না। আমি চাই প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে যেতে। প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে সামনে এগোলে কাজ ভালো হয়। একটা গ্রহণযোগ্য মাধ্যমে যাওয়া দরকার। তাহলেই সবকিছু সুন্দর হবে।
কেউ কেউ বলছেন আদালত অবমাননা করে আপনি শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদ ব্যবহার করছেন?
না তো। বিষয়টি উচ্চ আদালতে আছে। আমাকে তো রান করতে বলা হয়েছে। আমি সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। যারা বলছেন তারা বলার জন্য বলছেন। কিন্তু, বিষয়টি মোটেও সত্যি না।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি গত এক বছরে কী কী কাজ করেছে?
অনেকগুলো কাজ আমরা সমিতির মাধ্যমে করেছি। ১০৩ জন শিল্পীর ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। তারা পরিচয়পত্র পেয়েছেন। এটা বড় একটি কাজ হয়েছে। যত সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে আমরা সেগুলোর জন্য প্রমোশন করছি। সেটা যার সিনেমাই হোক না কেন। এই কাজটির ব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছি। সবাই পজিটিভভাবে দেখছেন। এবারের বন্যায় আমরা ত্রাণ নিয়ে সিলেটে গিয়েছি। ঢাকা ৮৬ খ্যাত নায়িকা রঞ্জিতার পাশে দাঁড়িয়েছি। তাকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করেছি। কিন্তু, ফোকাস করিনি। একজন শিল্পীর সম্মান মানে আমাদের সবার সম্মান। ফোকাস করে কারো ইমেজেরে ক্ষতি করতে চাইনি। কোনো শিল্পীর মেয়ের বিয়েতে টাকার প্রয়োজন, যতটুকু পারছি করছি। একজন শিল্পীর সন্তানের পড়ালেখার জন্য অর্থ দরকার, আমরা সমিতি থেকে কিছু দিচ্ছি। কিন্তু নীরবে কাজগুলো করছি। এসব শিল্পীরা জানেন। তারা জানলেই হলো। দেখানোর প্রয়োজন মনে করছি না।
এফডিসির পরিবেশ নাকি ভালো না?
কে বলেছেন এ কথা? আপনারা এসে দেখুন, এফডিসির পরিবেশ আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। এফডিসের পরিবেশ এখন অনেক ভালো। এফডিসি এখন শৃঙ্খলার মধ্যে চলছে। আজ ছুটির দিন শিল্পী সমিতির অফিস বন্ধ। কিন্তু আগে এটা হত না। কখনো কখনো রাতভর খোলা থাকত। মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা থাকত। তা হবে কেন? এটা তো সরকারি জায়গায়। নিয়ম মনে চলতে হবে। যে কেউ এসে দেখে যাক এফডিসির পরিবেশ অনেক সুন্দর।
এফডিসিতে ১৯টি সংগঠন, এত সংগঠনের প্রয়োজন আছে কি?
সংগঠনের দরকার আছে। ধরুন ক্যামেরাম্যানদেরও সংগঠন আছে। তাদের সমস্যা হলে কে দেখবে? সংগঠন থাকা উচিত। আমরা ১৯টি সংগঠন কিন্তু এক হয়ে গেছি। আমরা যা কিছু করছি সব সংগঠন মিলে করছি। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, ভাষা দিবসসহ নানা অনুষ্ঠান সব সংগঠন মিলে করছি। তবে, সবচেয়ে প্রয়োজন হচ্ছে প্রয়োজক সমিতিটাকে। প্রযোজক সমিতির কার্যক্রম বেশি দরকার।
ঢাকাই সিনেমায় গত ২ মাস ধরে নতুন হাওয়া বইছে, কীভাবে দেখছেন...
অবশ্যই এটা ঢালিউডের সিনেমার জন্য সুখবর। এটাকে আমরা খুব ইতিবাচকভাবে দেখছি। এভাবেই সিনেমার সুদিন ফিরে আসবে।
Comments