বিউটি সার্কাস: কতটা সার্কাস, কতটা মুক্তিযুদ্ধ

বিউটি সার্কাস: কতটা সার্কাস, কতটা মুক্তিযুদ্ধ
বিউটি সার্কাস ছবির দৃশ্যে জয়া আহসান। ছবি: সংগৃহীত

জয়া আহসান কী অনায়াসে চরিত্রের গভীরে ঢুকে বিউটি হয়ে উঠলেন! তিনি সার্কাস দলের প্রধান; আকর্ষণীয় এক নারী। যাকে পেতে বানিয়াশান্তা মেলার সার্কাস এলাকায় অনেক পুরুষ মরিয়া হয়ে উঠেন।

কিন্তু বিউটির মনের ভেতর শৈশবের ভয়ঙ্কর ঘটনা তাকে এলোমেলো করে রাখে। সার্কাস ও মুক্তিযুদ্ধ এই সিনেমার গল্পে হাত ধরাধরি করে এগিয়েছে 'বিউটি সার্কাস' সিনেমায়। যতটা সার্কাস, ঠিক ততোখানিই রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। বাড়তি যোগ হয়েছে ধর্মীয় উগ্রবাদ।

সিনেমার গল্পে দেখা যাবে বিউটি শৈশবে দেখছে তার বাবা-মাকে হত্যা করা হচ্ছে। হত্যার কারণ মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকারদের মিছিলে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল তার বাবা। তিনি ছিলেন দি বেঙ্গল সার্কাসের প্রধান। বড় হয়ে সেই সার্কাসের হাল ধরেন বিউটি।

সিনেমার গল্প হিসেবে মন্দ নয়, বাংলাদেশে সার্কাস নিয়ে এমন সিনেমা আগে হয়নি। সার্কাসের যে কয়েকটি দৃশ্য রয়েছে তা খুবই উপভোগ্য। নারীর ভেতরের অদম্য সংগ্রাম, জাগরণ দারুনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন জয়া আহসান। ভেতরের আগুন জ্বালিয়ে অনায়াসে অভিনয় করে গেলেন তিনি। সিনেমার প্রতিটা লুকে বিউটি হয়ে থাকলেন। শূন্যে থাকা সরু দড়ির ওপর হেঁটে যেতে দেখা গেছে তাকে। সার্কাসের কতকিছুই খুঁটিনাটি শিখেছেন চরিত্রটি করতে গিয়ে। চরিত্রের প্রয়োজনে এই একাগ্রতা, এতোখানি আগ্রহ কয়জন অভিনয়শিল্পীর থাকে?

জয়া আহসানের প্রেমিক চরিত্রের অভিনয়শিল্পী এবিএম সুমন এই সিনেমার 'রংলাল' চরিত্রে জ্বলে উঠেছেন। জয়া আহসানের মতো একজন অভিনয়শিল্পীর বিপরীতে তার স্বতস্ফূর্ত অভিনয় চোখে আটকে গেছে।

বখতিয়ার চরিত্রের প্রতি শতভাগ মনোযোগী ছিলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস । দীর্ঘদিন পর পর্দায় অভিনয়ের জাদু দেখিয়েছেন তিনি। জমিদার চরিত্রের ভেতরের নানারূপ ফুটিয়ে তুলেছেন চরিত্রের মধ্য দিয়ে।

নবাব চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌকির আহমেদ। গ্রামের ক্ষমতাবান কতিপয় মানুষ এমনই হয়ে থাকেন। তবে এতটা উচ্চস্বরে তারা কথা বলেন কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।

রাজাকার কাদের চরিত্রে অভিনয় করেছেন গাজী রাকায়েত, নিজের অভিনয়গুণে জ্বলে উঠেছেন তিনি। সার্কাসদলের কর্মী চরিত্রে প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ূন সাধুকে দেখে স্মৃতিময় হয়ে উঠবেন অনেকেই। জয়া আহসানের সঙ্গে তার অভিনয়ের দৃশ্য আবেগী করে তুলবে।

সিনেমায় দুটি গানের ব্যবহার অন্যমাত্রা দিয়েছে। গানের সঙ্গে সিনেমার দৃশ্য মিলেমিশে এক হয়ে গেছে। কণ্ঠশিল্পী শারমিন সুলতানা সুমির কণ্ঠে 'বয়ে যাও নক্ষত্র' ও  জুনায়েদ ইভানের কণ্ঠে 'নিরুদ্দেশ' গানটি দর্শক হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।

প্রথম নির্মাণ হিসেবে পরিচালক মাহমুদ দিদারের বড় একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে দারুণ গল্পের সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। তার এই যাত্রা অব্যহত থাকুক।

Comments

The Daily Star  | English

Rohingyas may go hungry after November: WFP

Food assistance for over 1.2 million Rohingyas in Bangladesh will end after November 30 unless urgent funds are secured, the World Food Programme has warned.

8h ago