দুধকুমারের ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে চর বেপারীপাড়া গ্রাম

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের চর বেপারীপাড়া গ্রামটি দুধকুমার নদের ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে।
কুড়িগ্রামে ভাঙন
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের চর বেপারীপাড়া গ্রামে দুধকুমার নদের ভাঙন। ১৫ আগস্ট ২০২২। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের চর বেপারীপাড়া গ্রামটি দুধকুমার নদের ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে।

ভাঙনের ফলে গত ১০ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহে এই গ্রামের ২০ পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। নদীগর্ভে চলে গেছে ২০০ বিঘার বেশি আবাদি জমি।

ভাঙন হুমকিতে আছে আরও দেড় শতাধিক বসতভিটা ও কয়েক শ বিঘা আবাদি জমিসহ নানা স্থাপনা।

ভাঙন হুমকিতে থাকা ওই গ্রামের অধিবাসীরা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে চর বেপারীপাড়া গ্রামে দুধকুমারের ভাঙন চলছে। প্রতিদিনই বসতভিটা, আবাদি জমি ও ফলের বাগান হারাতে হচ্ছে।

ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা অনেকে ঘর সরিয়ে নিরাপদে নিয়ে যাচ্ছেন। এই মুহূর্তে ভাঙন ঠেকানো না গেলে গ্রামটি মানচিত্র থেকে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে তারা মন্তব্য করেন।

কুড়িগ্রামে ভাঙন
ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

ওই গ্রামের ৭৭ বছর বয়সী নুরা মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রামটি খুব পুরনো। এখানকার জমিতে আশানুরূপ ফসল হয়। সবাই কৃষিকাজ করছেন। দুধকুমারের ভাঙন শান্তি কেড়ে নিয়েছে। অনেকে বসতভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়েছেন। ভাঙনের ফলে গ্রামটি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।'

ভাঙনে বসতভিটা হারানো কাদের আলী (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রায় ৩ বিঘা আবাদি জমি ও বসতভিটা হারিয়ে অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছি। কীভাবে বাঁচবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।'

ভাঙনে বসতভিটা হারানো আকলিমা বেওয়া (৬৩) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুধকুমারের ভাঙনে গৃহহীন হয়েছি। সরকারি রাস্তায় ঘর রেখেছি। কেউ আশ্রয় না দিলে রাস্তার পাশে ঘর তুলে থাকতে হবে। জমি কিনে বাড়ি করার সামর্থ্য নেই।'

চর বেপারীপাড়া গ্রামে সমাজকল্যাণ সংঘের সভাপতি ফজলুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত বছর ভাঙনের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুভর্তি জিওব্যাগ ও জিও টিউব ফেলেছিল। এ বছর এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখি নাই। কয়েক বার যোগাযোগ করেও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে সাড়া পাইনি।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চর বেপারীপাড়া গ্রামে দুধকুমারের ভাঙন রোধে আপাতত কোনো প্রকল্প নেই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে ভাঙন রোধে কাজ করা হবে।'

Comments