তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেমি ওপরে, পানিবন্দি ২০ হাজার মানুষ

লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে প্লাবিত হয়েছে ৬৫টি চর ও নদী তীরবর্তী গ্রাম। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় গ্রামগুলোতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংকটে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন পানিবন্দি মানুষজন। 
ছবি: স্টার

লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে প্লাবিত হয়েছে ৬৫টি চর ও নদী তীরবর্তী গ্রাম। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় গ্রামগুলোতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংকটে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন পানিবন্দি মানুষজন। 

আজ শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী এলাকায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

আজ সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান। 

মিজানুর রহমান বলেন, 'গত ১২ ঘণ্টায় তিস্তার পানি ৫ সেন্টিমিটার কমেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। অবিরাম বর্ষণ আর উজানে ভারত থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানি আসা বন্ধ হলে আগামি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তার পানি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার নিচে চলে আসবে। উজানের পানির চাপ কমাতে খোলা রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো।'

ছবি: স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিস্তাপাড়ে ঝুঁকিপুর্ণ এলাকা থেকে পানিবন্দি কিছু মানুষকে বৃহস্পতিবার রাতেই নিরাপদ স্থানে আনা হয়েছে। পানিবন্দি লোকজনের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।' এ ছাড়া পানিবন্দি লোকজনকে শুকনো খাবার বিতরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধান এলাকার কৃষক আবদার হোসেন (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ঘরের ভেতর ৩-৪ ফুট পানি উঠেছে। গবাদি পশুপাখি নিয়ে তাদের সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিতে হয়েছে। ঘর থেকে নদীর পানি নেমে গেলে বাড়ি ফিরে যাবেন। রান্না করতে না পারায় শুকনো খাবার খেয়ে আছেন।


 
একই গ্রামের পানিবন্দি নুর জাহান বেগম (৪০) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, নলকূপ ও ল্যাট্রিন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এজন্য তাদের কষ্ট করতে হচ্ছে। শিশু সন্তানদের নিয়ে দুর্ভোগে আছেন। বৃহস্পতিবার সারা রাত ঘুমাতে পারেননি। তিস্তা নদীর পানি বাড়লে এভাবে তাদেরকে কষ্ট করতে হয়।
 
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি গ্রামের পানিবন্দি কৃষক মোসলেম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আমন ধান ও শাক-সবজির খেত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান খেতের তেমন ক্ষতি না হলেও শাক-সবজির ক্ষতি হবে। পঞ্চম বারের মতো তাদের বন্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এর আগে গত দুমাসে তারা আরও ৪ বার বন্যা মোকাবিলা করেছেন। 

তিনি বলেন, 'তিস্তার পানি বাড়লে হামারগুরার দুঃখ-কষ্টও বেড়ে যায়। যখন হামার পানির দরকার হয় তখন হামরা তিস্তা নদীত পানি পাই না। অসময়ে পানি আসলে হামাকগুলাক বানের পানিত ভাসি যাওয়া নাগে। হামারগুলার ফসলের ক্ষতি হয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago