লালমনিরহাটে বিপৎসীমার নিচে তিস্তার পানি

লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বৃহস্পতিবার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় নদীর চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ছবিটি গতকাল বুধবার তিস্তাপাড়ের বাগডোরা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে তোলা। ছবি: দিলীপ রায়

তিস্তা নদীর পানি কমে বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটে তিস্তাপাড়ে প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে নামতে শুরু করেছে নদীর পানি। তবে নদীর পানিতে প্লাবিত গ্রামের মানুষের কষ্ট কমেনি।

বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানিও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানিয়েছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার।

সুনীল কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বৃষ্টিপাত না হওয়া আর উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসা বন্ধ হওয়ায় দ্রুত কমেছে তিস্তা নদীর পানি। গতকাল সকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় তিস্তাপাড়ের চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে নদীর পানি নামতে শুরু করেছে। এখনো বেশি কিছু এলাকার ঘর-বাড়িতে নদীর পানি রয়েছে। আপাতত লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির কোনো শঙ্কা নেই বলে তিনি জানান।

লালনিরহাট সদর উপজেলার বাগডোরা গ্রামের ফাতেমা বেগম (৪৮) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বুধবার সকালে তাদের ঘরের ভেতর পানি ঢুকেছিল। রাতে নদীর পানি ঘর থেকে নেমে গেছে। এখনো বাড়ির উঠানে পানি আছে। নদীর পানি ঢুকে পড়ার কারণে বাড়ির ভেতরে ও বাইরে কাঁদা। এজন্য চলাচল করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিস্তা নদীর পানির কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না। সকালে যদি তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে যায় তো বিকালে চলে আসে বিপৎসীমার নিচে। ঘর-বাড়ি থেকে নদীর পানি নেমে গেছে। আমন বীজতলা থেকে পানি নেমে গেছে। রাস্তা-ঘাট থেকে পানি নেমে গেছে কিন্তু কাঁদা সৃষ্টি হওয়ায় চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আদিতমারী উপজেলার বালাপাড়া গ্রামের দিনমজুর মিজানুর রহমান (৪৬) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিস্তা নদীতে পানি বাড়লে তাদের বাড়িতে নদীর পানি ঢুকে পড়ে। পানি নেমে গেলে বাড়িতে কাঁদার সৃষ্টি হয়। পানি বাড়লেও কষ্ট আর পানি কমলেও দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কুড়িগ্রামে প্রধান নদ-নদী ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা, ধরলা ও গঙ্গাধরের পানি বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আপাতত বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা নেই। তবে বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। নদীভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।

Comments

The Daily Star  | English

22 out of 35 parties want caretaker govt system

As per proposals sent to constitution reform commission

9h ago