দুধকুমার ও তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি
কুড়িগ্রামে দুধকুমার ও লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দুই জেলার ৫টি উপজেলায় ১০ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানিতে তলিয়ে গেছে চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকার রাস্তাঘাট ও আমন ধানের খেত। ব্রহ্মপুত্র নদসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি যেকোনো সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা পানি উন্নয়ন বোর্ডের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে দুধকুমার নদের পানি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ২৯ মিটার ৬০ সেন্টিমিটার)। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমসার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার)। উজানে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে নদ-নদীর পানি বাড়ছে। উজান থেকে আসা পানির চাপ থাকায় তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো গেট খুলে রাখা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, দুধকুমার ও তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় লালমনিরহাটে তিস্তাপাড়ে প্রায় ৭ হাজার ও কুড়িগ্রামে দুধকুমার পাড়ে প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর অনেকেই আসবাবপত্র ও গবাদি পশু নিয়ে সরকারি রাস্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার পাটেশ্বরী এলাকার কৃষক মোহর আলী (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বুধবার রাত থেকে দুধকুমার নদের পানি বাড়তে শুরু করে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুধকুমারের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। নদীর পানি লোকারয়ে ঢুকছে। বাড়ির ভেতর নদীর পানি ঢুকতে শুরু করেছে। যেকোনো সময় তাদেরকে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হতে পারে।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের কৃষক নজির হোসেন (৬৭) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে তিস্তা নদীর পানি ঘরের ভেতর ঢুকেছে। ঘরের ভেতর এখন ২-৩ ফিট পানি। তারা বাড়ি ছেড়ে সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। গ্রামের আমন ধানের খেত ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, উজানে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার বুকে চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উজানের পানি বন্ধ হলে তিস্তার পানি কমবে বলে তিনি জানান।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, উজানের পানিতে দুধকুমার নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদসহ অন্যন্য নদ-নদীর পানি বাড়ছে। দুধকুমারের বুকে চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। দুধকুমারপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন।
Comments