সিরাজগঞ্জে কমছে যমুনার পানি, কমেনি দুর্ভোগ
একটানা প্রায় ১০ দিন ধরে যমুনার পানি বাড়ার পর এখন কমতে শুরু করেছে। তবে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি বন্যাদুর্গতদের।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেল থেকে যমুনায় পানি কমতে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জের হার্ড পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ পয়েন্টে পানি কমেছে ১১ সেন্টিমিটার।
এদিকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় পানি কমেছে ১৩ সেন্টিমিটার।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রণজিত কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উজানে পানির চাপ কমে যাওয়ায় যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে আশেপাশের নদী-নালা, খাল-বিল সব পানিতে পূর্ণ থাকায় নদীর পানি কমলেও প্লাবিত নিম্নাঞ্চল থেকে পানি সরে যেতে আরও অনেক দিন সময় লাগবে।'
আসামে বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলের কারণে উজানে পানির চাপ বাড়ায় গত ২৩ আগস্ট থেকে সিরাজগঞ্জে পানি বাড়তে থাকে, টানা ১০ দিন বাড়ার পর পানি কমতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি। মাঝে কিছুটা কমলেও গত ৫ দিন ধরে দ্রুত গতিতে পানি বাড়ায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিরাজগঞ্জের ৫টি উপজেলার একটি পৌরসভা ও ২২টি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রাম। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
এদিকে নদীতে পানি কমলেও এখনো দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যমুনা পাড়ের বন্যা কবলিতরা।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বামনগ্রামের আজিজুল হোক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যমুনায় দ্রুত গতিতে পানি বাড়ার ফলে তার নদীপাড়ের দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যা কবলিত হওয়া থেকে বাঁচতে গত সপ্তাহে রাস্তার পাশে দোকান নিয়ে আসলেও পানি বাড়ার ফলে এখন ওই রাস্তাটিও ডুবে গেছে।'
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বড় কয়রা গ্রামের শরিফ হোসেন জানান, গত প্রায় ৫ দিন ধরে পানিবন্দি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাকে। ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ায় খাটের ওপর বসেই রান্না, খাওয়া, ঘুমানো সব করতে হচ্ছে।
ঘর থেকে পানি নামতে থাকলেও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'পুরো এলাকা প্লাবিত হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছি।'
স্থানীয়রা জানান, যমুনা নদীতে পানি দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
Comments