তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর, রংপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

রংপুরের কাউনিয়ার গদাই গ্রাম থেকে তোলা ছবি। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার প্রায় ১০টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের উজানে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানির স্তর বিপৎসীমার উপরে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

তারা আরও জানান, কয়েকদিন আগে তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়ার নিম্নাঞ্চল ও নীলফামারীর কিছু অংশে বন্যা দেখা দেয়। বর্তমানে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে উপজেলার ১১টি চরাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে বালাপাড়া ও ঢেপামধুপুর ইউনিয়নের বন্যাকবলিত গ্রামগুলোর অনেক বাসিন্দা তাদের পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি।

কাউনিয়া উপজেলার হরিশচর গ্রামের কামাল হোসেন জানান আকস্মিক এই বন্যায় তার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ফসলের জমিরও।

'রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় আমাদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এলাকার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। গ্রামের অনেক স্থানে টিউবওয়েল তলিয়ে গিয়ে খাবার পানির সংকট এখন', বলেন তিনি।

ঢেপামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, বন্যা অনেক পরিবারের ছাগলসহ গবাদি পশু কেড়ে নিয়েছে। তলিয়ে গেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ফসলি জমিও।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে সুপেয় পানির সংকটে উদ্বেগ প্রকাশ করে আমিনুল ইসলাম বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্ত অনেক বাসিন্দার কাছে এখনো ত্রাণ পৌঁছায়নি।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দ্রুত শুকনো খাবার বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, চলমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তিস্তা, দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানি আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী এলাকার কিছু এলাকায় বন্যা সতর্কতা জারি করেছে। রংপুরে স্বল্প সময়ের জন্য বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা।

তারা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর অঞ্চলে কোনো বৃষ্টিপাত না হলেও ভারতের গ্যাংটকে একই সময়ে ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা সাময়িকভাবে রংপুরের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

The Daily Star, HSBC honour high achievers in O- and A-Level exams

To commemorate the victims of the July Uprising, the programme began with a one-minute silence, followed by the rendition of the national anthem

46m ago