ফেনীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ, শয্যা সংকটে হাসপাতালের মেঝেতে চলছে চিকিৎসা

ফেনীতে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় হাসপাতালের বারান্দাতেও রোগীদের রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরের চিত্র। ছবি: স্টার

ফেনীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট তৈরি হয়েছে।

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় রোগীদের কারও ঠাঁই হয়েছে বারান্দায়, এমনকি সিঁড়িতেও আছেন কেউ কেউ। শয্যার সংকটের কারণে ওয়ার্ডগুলোতে পা ফেলার জায়গা নেই।

আজ শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়। সেখানে এখন রোগী ভর্তি আছেন ৯৬ জন।

বুধবার রাত থেকে ১১ বছর বয়সী কন্যা নুসরাত জাহানকে নিয়ে হাসপাতালে আছেন উপজেলার মতিগঞ্জের বাসিন্দা লায়লা আকতার।

তিনি বলেন, 'ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সেখানে বিশুদ্ধ পানি পেয়ে ট্যাংকে জমে থাকা পানি পান করেছে মেয়ে।

এরপর থেকে বমি ও ডায়রিয়া শুরু হয়েছে।'

হাসপাতালের মেঝেতে রেখে ডায়রিয়ার রোগীদের চিকিৎসা চলছে। ছবি: স্টার

তিনি বলেন, এখানে আসার পর দেখি হাসপাতালভরা রোগী। মেঝেতে একটি তোষক দিয়ে আমাদের বিছানা করে দেন একজন ওয়ার্ডবয়। তিনদিন ধরে বিছানার চাদরটা পর্যন্ত পরিবর্তন করা হয়নি।

২৮ মাস বয়সী ছেলে মোহাম্মদ হোসেন নিলয়কে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাসপাতালে আছেন কামরুন নাহার। তার সন্তানের জ্বর এবং ডায়রিয়া।

কামরুন নাহারের ভাষ্য, তার ছেলেকে তিনি ফুটিয়ে পানি করিয়েছেন। তবু সে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে ৮০ শতাংশ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন মেডিকেল অফিসার ডা. অর্ণব মল্লিক।

তিনি বলেন, আমরা রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছি না। অতিরিক্ত বিছানা বিছিয়ে হলেও ভর্তি নিচ্ছি। তাই একসঙ্গে এত রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।

ভর্তি রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, তার শুধু নির্দিষ্ট কয়েক ধরনের ওষুধ সরকারিভাবে পাচ্ছেন।

উপজেলার আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা ও একজন রোগীর স্বজন সোহেল আহমদ বলেন, নামেই সরকারি হাসপাতাল। বেশিরভাগ ওষুধ ফার্মেসি থেকে কিনতে হচ্ছে।

ডায়রিয়া আক্রান্ত নুসরাত জাহানের মা লায়লা আকতারের দাবি তিনি শুধু দুটি স্যালাইন পেয়েছেন। বাকি ওষুধ দোকান থেকে কিনে এনেছেন।

মেডিকেল অফিসার ডা. অর্ণব মল্লিক বলেন, মজুত থাকা সবধরনের ওষুধ দিচ্ছি আমরা। বাকিগুলো বাইরে থেকে কিনছেন তারা।

Comments

The Daily Star  | English

Why landscape-based knowledge is critical for Bangladesh

How will we build the country without landscaping knowledge?

16h ago