নেত্রকোনা: বন্যায় ভেসে গেছে দেড় হাজার পুকুরের মাছ

বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও সদর উপজেলার। ছবি: সংগৃহীত

অব্যাহত ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ৬ অক্টোবর থেকে নেত্রকোনার পাঁচ উপজেলায় সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় প্রায় দেড় হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বিভাগীয় মৎস অধিদপ্তরের প্রাথমিক হিসাবে এই ক্ষতির পরিমাণ আট কোটি ২৪ লাখ টাকা।

তবে জেলার মাছ চাষিদের দাবি, ক্ষতির পরিমাণ অধিদপ্তরের প্রাথমিক হিসাবের তুলনায় বেশি।

নেত্রকোনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলাটিতে মুক্ত ও বদ্ধ জলাশয়ের পরিমাণ ৮৪ হাজার ১৬৫ হেক্টর। এতে মাছ উৎপাদন হয় প্রায় এক লাখ ১০ টন। এর মধ্যে ছোট-বড় ৮৯টি হাওরে ৪০ শতাংশ, খাল-বিল ও নদ-নদীতে ১৫ শতাংশ মাছ উৎপাদিত হয়। বাকি ৪৫ শতাংশ মাছ পুকুরে চাষ করা হয়। জেলায় পুকুরের সংখ্যা ৬০ হাজার ১০২টি। মাছচাষির সংখ্যা ৪৮ হাজার ২৩৮ জন।

মাছ চাষিরা বলছেন, দুর্গত উপজেলাগুলোর ৩১২ হেক্টর জমিতে অন্তত এক হাজার ৪৮০টি পুকুর ও খামারের ৭২৩ টন মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। এ কারণে ৮৯৬ জন চাষি প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকারি হিসেবে শুধু মাছের যে ক্ষতির কথা বলা হয়েছে তা মূলত আরও বেশি। আবার অবকাঠামোর ক্ষতি এর বাইরে থেকে গেছে। এই ক্ষতির পরিমাণ আরও ১ কোটি ২১ লাখ টাকা।

বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও সদর উপজেলার। সদরের ৯৬৩টি ও কলমাকান্দায় ৩২২টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন অনেকে।

বারহাট্টা উপজেলার মৎস্যচাষী জালাল উদ্দিন জানান, কোনো প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ ছিল না। হঠাৎ চলে আসা ঢলে সব মাছ ভেসে গেছে।

কলমাকান্দার আমতৈল গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, তার ক্ষতির পরিমাণ ২৫ লাখ টাকার মতো।

মৎস্য অধিদপ্তর ময়মনসিংহের বিভাগীয় উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, আকস্মিক বন্যায় মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে অনেক। প্রাথমিক তথ্য নিয়ে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা, বারহাট্টা ও সদর উপজেলার এ বন্যায় ১৩১টি গ্রামে পানিবন্দী হন ৬৫ হাজার মানুষ। প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়। পানির কারণে ২১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।

Comments

The Daily Star  | English
Touhid Hossain Rohingya statement

Rohingya repatriation unlikely amid Myanmar’s civil war: foreign adviser

He highlights the 2017 mass exodus—prompted by brutal military crackdowns was the third major wave of Rohingyas fleeing Myanmar

59m ago