ভূমিকম্পে মিয়ানমারে নিহত বেড়ে ১৬০০, থাইল্যান্ডে ১৭

মিয়ানমারে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে উদ্ধার অভিযান চলছে। ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৬০০–এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির জান্তা সরকার।

এছাড়া দেশটিতে তিন হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ আহত এবং ১৩৯ জনের মতো নিখোঁজ আছেন।

অপরদিকে এই ভূমিকম্পে প্রতিবেশী থাইল্যান্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭ জনে দাঁড়িয়েছে এবং ৮৩ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ব্যাংকক মেট্রোপলিটন কর্তৃপক্ষ।

ব্যাংককে নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবন ধসের ঘটনাতেই শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

রয়টার্স বলছে, ওই ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন মিয়ানমারসহ অন্যান্য দেশের ৪৭ শ্রমিক।

ভূতাত্ত্বিক জেস ফিনিক্স সিএনএনকে জানিয়েছেন, শুক্রবারের ভূমিকম্পের সময় ৩৩৪টি আণবিক বোমার সমান শক্তি নির্গত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এমনকি প্রকৃত প্রাণহানির সংখ্যা জানতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পে প্রাণহানি ১০ হাজার থেকে এক লাখ পর্যন্ত এবং এর অর্থনৈতিক প্রভাব মিয়ানমারের জিডিপির ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। মিয়ানমারে চীনের দূতাবাস শনিবার বলেছে, বেইজিং তাঁবু, কম্বল এবং জরুরি চিকিৎসা কিটসহ মিয়ানমারকে ১৩ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্রদান করবে।

মিয়ানমারের জান্তার ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এই দুযোর্গে দেশটিকে সহায়তা করা হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইতোমধ্যে ভারত থেকে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে একটি সামরিক বিমান ইয়াঙ্গুনে অবতরণ করেছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

ভারতের সরকার জানিয়েছে, তারা মিয়ানমারে ৪০ টন ত্রাণের একটি জাহাজও পাঠিয়েছে।

রাশিয়া, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরও মিয়ানমারে ত্রাণসামগ্রী এবং উদ্ধারকর্মী পাঠাচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, মিযানমারে উদ্ধারকাজ চালাতে গতকাল ৪৯ জন সেনা সদস্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

যুক্তরাজ্যের সরকারও মিয়ানমারের জন্য ১০ মিলিয়ন পাউন্ডের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মিয়ানমারে উদ্ধারকাজে বেগ পাওয়া সত্ত্বেও দেশটির যুদ্ধ বিক্ষুব্ধ অঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে জান্তা সরকার।

ভূমিকম্প আঘাত হানার তিন ঘণ্টারও কম সময়ে স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উত্তরের রাজ্য শানের নাউংচোতে বিমান হামলা চালায় জান্তা বাহিনী। হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে বিবিসি বার্মিজ।

এছাড়া দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো উত্তর-পশ্চিমের সাগাইং অঞ্চলের চ্যাং-ইউ শহরে বিমান হামলার খবর দিয়েছে। 

জাতিসংঘ একে সম্পূর্ণরূপে 'জঘন্য এবং অগ্রহণযোগ্য' বলে বর্ণনা করেছে।

জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুস বলেছেন, 'ভূমিকম্পের পর যখন মানুষ উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে, তখনো সেনাবাহিনী বোমাবর্ষণ করছে—এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।'

টম অ্যান্ড্রুস মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে এখনই সব ধরনের সামরিক অভিযান বন্ধ করতে বলেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

The elephant in the room no one is talking about

Reform of political parties is of urgent need

11h ago