সেন্টমার্টিনে খাদ্য-পানির সংকট, নেই ঘর মেরামতের সহযোগিতাও

রোববার সকালে এ ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ যখন উপকূল অতিক্রম শুরু করে, তখন এর কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবের চিহ্ন পুরো সেন্টমার্টিন জুড়ে। দ্বীপবাসীরা এখন খাবার, সুপেয় পানি ও ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামতের উপকরণের জন্য হাহাকার করছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী থেকে কিছু শুকনো খাবার সরবরাহ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এখন পর্যন্ত রান্না করা কোনো খাবার সরবরাহ করা হয়নি।

সেন্টমার্টিনে অবস্থানরত পর্যটন ব্যবসায়ী তকি উসমানি খোকা আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিজিপির পক্ষ থেকে একটি হেলিকপ্টার এসে ২৫০-৩০০ জনকে ১ লিটার করে তেল, ২ কেজি চাল, আধা কেজি চিনি, আধা কেজি লবণ ও আধা কেজি ডাল দিয়েছে।'

স্থানীয় চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে এখনো কিছু দেওয়া হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, 'টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে ৪টি করে স্যালাইন, ২ লিটার পানি, আধা কেজি মুড়ি, আধা কেজি চিনি ও ১ কেজি চিড়া দেওয়া হয়েছে। তবে যাদেরকে চিড়া দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে মুড়ি দেওয়া হয়নি। আর যাদেরকে মুড়ি দেওয়া হয়েছে তাদেরকে চিড়া দেওয়া হয়নি।'

এই পর্যটন ব্যবসায়ীর মতে, স্থানীয়রা দাবি জানাচ্ছেন যে এসব না দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য ১ থেকে ২ কেজি পলিথিন দেওয়া হলে তাদের বেশি উপকার হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় টেকনাফ থেকে কোনো নিত্যপণ্য আনা যাচ্ছে না এবং স্থানীয় দোকানে যা ছিল তার প্রায় সব শেষ।'

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, 'সমুদ্রের পানি প্রবেশ করায় মিঠা পানির উৎসগুলো লবণাক্ত হয়ে গেছে। ফলে, আমরা খাবার পানির সংকটে আছি। কয়েকটি জায়গায় পুকুর ও টিউবওয়েলের পানি লবণাক্ত হয়নি। সবাই সেসব জায়গায় ছুটছেন পানির জন্য।'

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল টেলিফোনে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটুকু খাবার দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে, সেগুলো দিয়ে মানুষ কোনো রকমকে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। যে খাবার দেওয়া হচ্ছে সেগুলো দিয়ে একটি পরিবারের একবেলাও হবে না।'

ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি মেরামতে কোনো সহায়তা দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা এর জন্য দাবি জানিয়েছি। কিন্তু এই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ৭০০টির মতো বাড়ি ভেঙে গেছে। ২৫০ থেকে ৩০০ সেমিপাকা বাড়ির টিন উড়ে গেছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Govt to unveil 'July Declaration' on August 5

It will be presented in presence of all stakeholders involved in the mass uprising at 5:00pm

2h ago