লোডশেডিং: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর দাবি কমছে, বাস্তবে বেড়েছে

সেপ্টেম্বরের চেয়ে অক্টোবরে সারা দেশেই বেড়েছে লোডশেডিং। তবে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলছেন, লোডশেডিং কমেছে।
প্রতীকী ছবি

সেপ্টেম্বরের চেয়ে অক্টোবরে সারা দেশেই বেড়েছে লোডশেডিং। তবে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলছেন, লোডশেডিং কমেছে।

গত শুক্রবার নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আগের থেকে লোডশেডিং কমেছে। কিন্তু, এখনো প্রতিদিন লোডশেডিং হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ মেগাওয়াট।'

যদিও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি লিমিটেডের (পিজিসিএল) প্রতিদিনের লোডশেডিংয়ের তথ্য বলছে ভিন্ন কথা।

যেদিন ৭০০-৮০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে বলে নসরুল হামিদ জানান, সেদিনও লোডশেডিং ছিল ৯৬৪ মেগাওয়াট, যা মোট চাহিদার ৮ শতাংশ।

একই অবস্থা অক্টোবরের অন্যান্য দিনগুলোতেও।

গত মঙ্গলবার গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে দেশের বেশিভাগ এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। ওই দিন ছাড়া অক্টোবরের বাকি দিনগুলোয় লোডশেডিং ছিল সেপ্টেম্বরের যেকোনো দিনের চেয়ে বেশি।

গত ৬ অক্টোবর লোডশেডিং ছিল চাহিদার ৯ শতাংশ বা ১ হাজার ১৮৪ মেগাওয়াট। ওই দিন সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হয় ঢাকা বিভাগে, মোট ৪২৯ মেগাওয়াট।

এর আগের দিন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনুমান করেছিল যে চাহিদার প্রায় ৫ শতাংশ লোডশেডিং দিতে হতে পারে। বাস্তবে তা হয়েছিল দ্বিগুণেরও বেশি। ওই দিন শোডশেডিং হয় চাহিদার প্রায় ১১ শতাংশ বা ১ হাজার ৩৭৫ মেগাওয়াট।

গতকাল শনিবার ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড প্রকাশিত লোডশেডিংয়ের সময়সূচি অনুসারে, ঢাকার অধিকাংশ স্থান ও কোম্পানির আওতাভুক্ত শহরতলির কিছু অংশে ২৪ ঘণ্টায় ৩ থেকে ৫ বার লোডশেডিং হতে পারে।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সবচেয়ে লোডশেডিং হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৮ বার।

আজিমপুর, ধানমন্ডি, ডেমরা, খিলগাঁও, মগবাজারসহ অন্যান্য স্থানে ৫ বার লোডশেডিং হয়েছে।

কিছু লোডশেডিং রাত ১১টার পর থেকে নির্ধারিত ছিল।

তুলনামূলকভাবে, সেপ্টেম্বরে লোডশেডিং গত সপ্তাহের চেয়ে কম ছিল।

তথ্য মতে, সেপ্টেম্বরে প্রায় ১৯ দিন লোডশেডিং ছিল না। বাকি দিনগুলোয় লোডশেডিং হয়েছে চাহিদার ২ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে।

সেপ্টেম্বরের ২৩, ২৫ ও ২৮ তারিখ থেকে ৭০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হতে শুরু করে।

গত ১ সেপ্টেম্বর দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ২৬ মেগাওয়াট। লোডশেডিং ছিল না।

সেই তুলনায় বর্তমান চাহিদা ১ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট কম হলেও সরকার তা সরবরাহ করতে পারছে না।

বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সদস্য (জেনারেশন) মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বিষয়টি 'সতর্কতা'র কারণে হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, 'গ্রিডে ট্রিপ অনুভব করায় আমরা লোডের বিষয়ে সতর্ক আছি। আমরা প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি এবং এটিকে ১২ হাজারে নেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।'

Comments