এ মাস থেকে লোডশেডিং কমা শুরু হবে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। স্টার ফাইল ছবি

চলতি মাস থেকে লোডশেডিং কমে আসবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের আশাবাদী হতে হবে। পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে না, পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা কিছু সাশ্রয় করছি, এটাই বড় কথা। আমরা বিদ্যুৎ-গ্যাসে সাশ্রয় করছি, সবারই কিন্তু কষ্ট হচ্ছে, এটা আমরা অস্বীকার করছি না। আমাদের বুঝতে হবে, প্রতিটি দেশ সন্দিহান যে, কী হবে। আমাদের দেশ তো বাইরে না!

তিনি আরও বলেন, লোডশেডিং কমে এসেছে। আমরা চেষ্টা করেছি, শিল্প কারখানায় শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়ে আবাসিকে কিছুটা লোডশেডিং দিতে পারি কি না। আমরা এখন বেরিয়ে আসছি। এ মাস থেকে কমা শুরু হবে। আমাদের মাথায় আছে আমরা মার্চ থেকে কী করবো। সেই পরিকল্পনা করছি। আমি মনে করি না, আগামী ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি কোনো সমস্যা হবে। আমরা আস্তে আস্তে ভালো অবস্থানে যাব। আমি বলছি না, সম্পূর্ণ ভালো অবস্থানে যাব-ভালো অবস্থানে যাব। আগের থেকে ভালো অবস্থা হবে বিদ্যুতের ক্ষেত্রে।

নসরুল হামিদ বলেন, অফ গ্রিডে গ্যাস আনতে আমাদের পরিকল্পনা দুটি; স্বল্প পরিসরে সিএনজি করে নিয়ে আসতে পারি কি না এবং বৃহৎ পরিসরে গ্যাস পাইপ নির্মাণ করতে আমাদের ২-৩ বছর সময় লাগবে। সেটা আমরা বরিশাল হয়ে খুলনা ও পটুয়াখালীতে নিয়ে যাব। আমরা এগুচ্ছি সেভাবে। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে আমরা শতভাগ কানেক্টিভিটি করে ফেলেছি বহু আগেই। আমাদের যখন পরিস্থিতি ভালো ছিল আমরা বিদ্যুৎ দিচ্ছিলাম। শতভাগ বিদ্যুৎ দেওয়ার পরও আমাদের লোডশেডিং ছিল না। লোডশেডিং শুরু হয়েছে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে।

আগেও বলেছি আমাদের ডিমান্ড জ্বালানি। জ্বালানি ছাড়া তো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় না। নিজস্ব গ্যাস এবং চাহিদার বিপরীতে যে ঘাটতি ছিল সেটা বাইরে থেকে আমদানি করতাম। জ্বালানি হিসেবে আমরা কয়লা-তেল ব্যবহার করি। তেলের মধ্যে হেভি ফুয়েল ও ডিজেল ব্যবহার করি। এই জ্বালানির দাম যদি কম-বেশি হয় স্বাভাবিকভাবে বিদ্যুতের দামের কম-বেশি হবে। দামের এই পার্থক্য যদি বড় আকার ধারণ করে তাহলে বিদ্যুতের দামেরও বড় পার্থক্য হবে। আমি যদি দাম সমন্বয় করতাম, যেটা উন্নত দেশগুলো করেছে...আমরা সেদিকে যাইনি। আমরা শুধু জ্বালানি সমন্বয়ে গেছি, বলেন তিনি।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যেহেতু (দাম সমন্বয়) যাইনি, আমাদের বিকল্প ছিল হয় আমরা সেই জ্বালানি আনবো না, অগ্রাধিকারভিত্তিতে শিল্প কারখানায় দেবো আর কিছু গ্যাস দিয়ে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করবো। যেখানে আমরা ১১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্যাস দিয়ে বানাতাম, এখন ৫ হাজার বানাচ্ছি। আমরা কমিয়ে এনেছি, যার কারণে লোডশেডিং। আমরা বলছি আপনারা সাশ্রয়ী হোন; ১০টি বাতি জ্বালাতেন, ৫টি জ্বালান। অনেক দেশে রেশনিং করে দিয়েছে তেলের।

জাতিসংঘ বলছে, আগামী বছরগুলো খারাপের দিকে যাবে। আমরা সেটা কীভাবে মোকাবিলা করবো সেটার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এর একটি অংশ হলো আমরা কতটা সাশ্রয় করতে পারি। আমরা আশা করছি, আমরা যে অবস্থায় আছি আমাদের বিকল্প জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আসতে শুরু করবে কিন্তু কয়লা আমাদের আমদানি করতে হবে, সেখানেও দাম বেড়ে গেছে। আমাদের নিজস্ব আছে মাত্র ২ হাজার ৩০০ এমএমসিএফ গ্যাস। আমাদের চাহিদা প্রায় ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ এমএমসিএফ গ্যাস। তাহলে বাকি গ্যাস তো আমাদের আমদানি করতেই হবে। আমরা দুভাবে চুক্তি করেছিলাম; দীর্ঘ মেয়াদি, যেটা আমরা এখনো নিচ্ছি। আরেকটা হলো স্পট মার্কেট। স্পট মার্কেটে দাম সবচেয়ে কম ছিল, এটাই বেড়ে গেছে অনেক—বলেন তিনি।

নসরুল হামিদ আরও বলেন, গত বছর শিল্প কারখানায় আমরা যে পরিমাণ গ্যাস দিতাম, এ বছর আমরা একই গ্যাস দিচ্ছি। তাহলে ঘাটতি হলো কারণ বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে এবং শিল্প কারখানাগুলো প্রায় ১০০ এমএমসিএফ গ্যাসের উৎপাদন বাড়িয়েছে। এগুলো কীভাবে বিবেচনায় নেওয়া যায় সেটা আমরা চেষ্টা করছি। খারাপকে খারাপভাবে ফেইস করতেই হবে, উপায় তো নেই। আমরা চেষ্টা করছি, এর চেয়ে খারাপ পরিস্থিতি যাতে না হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

4h ago